১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • দেশজুড়ে
  • অনন্য এক অ্যাসাইনমেন্টের উদ্যোগে প্রশংসিত শিক্ষক আতিকুর রহমান।  




অনন্য এক অ্যাসাইনমেন্টের উদ্যোগে প্রশংসিত শিক্ষক আতিকুর রহমান।  

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, নয়া আলো।

আপডেট টাইম : মে ২৯ ২০২৪, ১৭:৩২ | 654 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

মোঃ আব্দুল গফুর, বশেফমুবিপ্রবি প্রতিনিধি।
‘অ্যাসাইনমেন্ট’ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের খুব পরিচিত এক শব্দ। যা শিক্ষকদের হাতে থাকা ধারাবাহিক মূল্যায়নের চল্লিশ মার্কের অংশ। শব্দটি জুড়ে আছে বিরক্তিকর অনুভূতি। কেননা এটি করতে গিয়ে ক্লান্তি এসে যায় পড়তে হয় মানসিক চাপে। যা শিক্ষার্থীদের কাছে অতিরিক্ত চাপেরও মনে হয়। তবে এমন মনে হলেও এটির গুরুত্ব অনেক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দেওয়া এসব অ্যাসাইনমেন্ট  সাধারণত গবেষণা প্রকল্প, প্রবন্ধ  কিম্বা কেস স্টেডি হয়ে থাকে।
সম্প্রতি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমানের এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্সে ভিন্ন রকম এক অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছেন। যা বিরক্তিকর হওয়ার বদলে হয়েছে আনন্দদায়ক। এতেই তিনি সবার দৃষ্টি কেরে হচ্ছেন প্রশংসিত।
বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের  শিক্ষার্থীদের তিনি গাছ লাগানোর এসাইনমেন্ট দিয়েছেন। যা পরিবেশ সুরক্ষা ও সচেতনতা  তৈরিতে কাজে দিবে। বিষয়টি এই কোর্সের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক। যা সত্যিকার অর্থেই অনন্য ও ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ।
বিভিন্ন প্রজাতির নানান রকম গাছ হাতে শিক্ষার্থীদের দেখা মেলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে। কেউ খুড়ছে মাটি, কেউ আনছে খুটি কেউবা লাগালো গাছে ডালছে পানি। প্রাণ চঞ্চল হাস্যজ্জল মুখে ছোটাছুটি করে বেশ উৎসাহের সাথেই করছে তারা এ কাজ।এ যেন এক প্রাণবন্ত উদ্যমের মেলা। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোন একটি পরীক্ষার (এসাইনমেন্ট) অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস কে আরো সবুজে সমারহ করার
কি দারুন এক প্রয়াস!
একাডেমিক ভবনের সামনে তাদের লাগানো এগারো ধরনের প্রায় চল্লিশটি গাছের মধ্যে ছিলো কাঠাল, জলপাই, আম, আতা, জাম্বুরা, বকুল, কৃষ্ণচূড়া, নিম , হরতকি, কড়ই ও মেহগনি গাছ। ফুল, ফলজ, বনজ ও ঔষধি কি ছিলো না তাদের এ তালিকায়।
অ্যাসাইনমেন্টে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সিদরাতুল জান্নাত রিফা বলেন, আমার আগে থেকেই জানি আমাদের এ সবুজ ক্যাম্পাস নানা ধরনের গাছপালায় সুসজ্জিত। তারপরেও আমাদের এই শিক্ষাঙ্গন  আরো সবুজ ও সুন্দর রূপে দেখার প্রত্যাশা আমাদের। সে জন্যই আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় অ্যাসাইনমেন্টের এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছি ।
আরেক শিক্ষার্থী ইউসা তাহসিন বলেন, “এই এসাইনমেন্ট আমাদেরকে শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি। এটি আমাদেরকে প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করেছে। সে জন্য স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। গাছ লাগানো এবং তার যত্ন নেওয়া সত্যিই আনন্দের। “
শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এভাবে বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষায় নতুন এক অভিজ্ঞতা অর্জন হলো। প্রতিবার এসাইনমেন্ট করতে চাপ এবং  বিরক্তিকর লাগতো কিন্তু এবার একটুও তেমন মনে হয়নি। এতে এক দিকে যেমন বাস্তবতার নিরিখে অনন্দের সাথে শেখা হচ্ছে তেমন মার্কও যুক্ত হচ্ছে।  গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে এমন শেখার সুযোগ তৈরী করে দেওয়ায় আমাদের প্রিয় শিক্ষক আতিকুর রহমান স্যারের প্রতি অনেক অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ। তিনি সবসময়ই আমাদের ভিন্ন ভাবে শেখান যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
প্রকৃতির গুরুত্ব বুঝতে, পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা ও পড়ানো বিষয় গুলো বাস্তবতার নিরিখে আরো ভালো ভাবে বুঝাতেই এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স শিক্ষক প্রভাষক আতিকুর রহমান এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। আজকাল হতাশা ও লেখা-পড়ায় অতিরিক্ত চাপ অনুভব একটি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাধিতে কেউ যেন আক্রান্ত না হয় এবং শিক্ষর্থীরা যেন লেখাপড়ায় আগ্রহী হয়ে উঠে তাই তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের জন্য এমন সচেতনতা মূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।  তিনি বলেন, আমার শিক্ষার্থীরা সমাজের প্রতি একজন দায়িত্ববান মানুষ হয়ে উঠবে। এ গাছ লাগানো শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত উন্নয়নেও সহায়তা করে। কারন এটি ধৈর্য, দায়িত্ববোধ এবং সৃজনশীলতার চর্চার একটি মাধ্যম।
তিনি আরো বলেন, এমন উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের আগ্রহই বেশি ছিল। তাদের এই বৃক্ষরোপণর শেষে আমার মনে হয়েছে এই এসাইনমেন্ট ভালোভাবে সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ কামরুল আলম স্যার শিক্ষার্থীদের জন্য এমন উদ্যোগে সব সময়ই আমাদের সমর্থন করেন তেমনি আজকেও এ বৃক্ষরোপনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থেকেছে। যা আমাদের এ ধরনের কাজের প্রতি আরো উৎসাহিত করেছে। স্যারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞ আমরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুল আলম খান বৃক্ষরোপণ উদ্বোধনে এসে মুগ্ধ হন। এ সময় তিনি বলেন গাছের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতে হবে এবং পৃথিবীটাকে বাঁচাতে হবে কারণ এ দায়িত্ব আমাদেরই। বৃদ্ধদের সোনার সঙ্গে এবং তরুণদের ডায়মন্ডের সঙ্গে তুলনা করে তিনি আরো বলেন তরুণদের এই ধরনের কার্যক্রম পরিবেশ সুরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা  রাখবে। কোর্সের শিক্ষক আতিকুর রহমানের এমন অনন্য উদ্যোগ যেমন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া আরো মনোযোগী করবে তেমনি অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
উল্লেখ্য, প্রভাষক আতিকুর রহমান এসাইনমেন্ট-প্রেজেন্টেশনের গতাগতিক ধরায় পরিবর্তন এনেছে। বিগত দিনও তার অন্যন্য কোর্স গুলোতে এভাবই নতুনত্ব এনে শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও যত্নশীল তিনি। তার এমন উদ্যোগ গুলো অন্যদের কাছেও অনুকরণীয় হয়ে উঠছে।
Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET