নিউজ ডেস্ক : অতিরিক্ত ওজনের কারণে প্রাথমিকভাবে টাইপ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে— দীর্ঘদিন ধরে এমন ধারণা প্রচলিত।
তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, গভীর রাতে বিছানায় যাওয়া এবং অপর্যাপ্ত ঘুম এ রোগের অন্যতম কারণ।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে যারা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান, তাদের তুলনায় ৫ ঘণ্টার কম ঘুমানো ব্যক্তির টাইপ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
এ প্রসঙ্গে ভারতের গেজ ডায়াবেটিক সেন্টারের পরামর্শক ও চিকিত্সক রোহানি গেজ বলেন, ‘গভীর রাতে ঘুমানোর কারণে টাইপ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। পূর্ণবয়স্কদের মধ্যে যারা পর্যাপ্ত ঘুমান না, তাদের রক্তে স্বাভাবিক চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’
চিকিত্সকরা জানান, মধ্যবয়স থেকে উচ্চরক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল ও অতিরিক্ত চর্বির মতো ডায়াবেটিসও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা তৈরি করে, যা মেটাবলিক সিন্ড্রোম নামে পরিচিত।
সারা বিশ্বে এ সমস্যা এখন প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ভারতে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটি, যা চীনের পরই সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস) বলছে, মানুষের জীবনধারায় পরিবর্তন এসেছে। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ অপর্যাপ্ত ঘুম। দিনের পর দিন এ রকম চলতে থাকলে এসব রোগ থেকে নিরাময় কঠিন হয়ে পড়ে।
অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণেও স্থূলতা দেখা দেয় বলে জানান রোহানি গেজ। তিনি বলেন, ‘ঘুমের অভাবে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত অনুভব করে। এ সময় শরীরে হরমোনের নিঃসরণ বেশি ঘটে, যা ক্ষুধার সৃষ্টি করে। বেড়ে যায় ক্যালরিযুক্ত ও শর্করা খাবার গ্রহণের পরিমাণ। এ সময় ঘুমের অভাব শরীরকে আরো চাপের মধ্যে ফেলে এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।’
এআইআইএমএসের অধ্যাপক আশরাফ গনি বলেন, ‘ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যার মধ্যে ঘুমের অভাব অন্যতম। ২০৩০ সাল নাগাদ ভারতে ৭ কোটি ৯৪ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যদিও এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে এর সংখ্যা থাকবে ৩ কোটি ৩ লাখ।