ঢাকা : মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আইএস, আল-কায়েদা যে বিবৃতি দিয়েছে, তা অবিশ্বাস করার কারণ নেই।’
তিনি অারও বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গিরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। এটা আমরা হতে দেব না, তাদের ধ্বংস করে দেব।’ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানে ফ্ল্যাটে ঢুকে মার্কিন দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা ও সমকামীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার জুলহাজ মান্নানকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয়কেও হত্যা করে তারা। খুনের পর হামলাকারীরা ‘আল্লাহু আকবর’ বলতে বলতে চলে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
জুলহাজ ও তনয়কে খুনের পর দায় স্বীকার করে আল কায়েদার সহযোগী সংগঠন আনসার-আল-ইসলাম। টুইটারে এক বার্তায় তারা বলে, আনসার-আল-ইসলামের মুজাহিদিনরা জুলহাজ মান্নান ও তার সহযোগী তনয়কে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে।
আনসার-আল-ইসলাম তাদের টুইটার বার্তায় আরও বলে, মার্কিন ‘ক্রুসেডার’ এবং তাদের ভারতীয় মিত্রদের সাহায্যে এরা বাংলাদেশে সমকামিতার প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করছিল।
জুলহাজ মান্নান বাংলাদেশে প্রথম সমকামীদের অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘রূপবান’-এর সম্পাদনামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ পত্রিকার আত্মপ্রকাশ ঘটে। বাংলাদেশের মতো মুসলিমপ্রধান দেশে এ ধরনের পত্রিকা প্রকাশ নিয়ে তখনই ‘বিতর্ক’ হয়। দেশের আলেম সমাজের পক্ষ থেকে অনেকে পত্রিকাটি নিষিদ্ধের দাবি জানান।
এ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জুলহাজ মান্নান হত্যাকাণ্ডে আমরা ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। এ বিষয়টি আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণে ভূমিকা রাখবে তার দেশ। শিগগিরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাইবার নিরাপত্তা টিম বাংলাদেশে আসবে বলেও জানান তিনি।
জুলহাজ মান্নান হত্যার পর বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা হুমকির মুখে কি না— স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এ প্রশ্ন রাখেন নিশা দেশাই। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটসহ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।