ভালো আছি ভালো থেকো গানের জনক” রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। মূল বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মিঠেখালি গ্রামে হলেও জন্ম পিতার কর্মস্থল বরিশাল জেলার আমানতগঞ্জ রেডক্রস হাসপাতালে। ১৬ অক্টোবর ১৯৫৬ সালে জন্ম নেওয়া কবির বাবার নাম ডাঃ শেখ ওয়ালিউল্লাহ ও মায়ের নাম শিরিয়া বেগম। উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া তারুন্যের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লার ২১শে জুন ৩০ তম মৃত্যু বার্ষিকী। ১৯৯১ সালের এই দিনে লক্ষ কবিতা প্রেমিদের কাঁদিয়ে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে চির বিদায় নিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে।
১৯৭৪ সালে চার বিষয়ে লেটার মার্ক্স নিয়ে এসএসসি পাস করেন ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুল থেকে। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। ১৯৮০ সালে সম্মানসহ বিএ এবং ১৯৮৩ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন মেধাবী রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। বহুল আলোচিত নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে ১৯৮১ সালের ২৯ জানুয়ারি বিয়ে করেন। ১৯৮৮ সালে তাদের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটে।
প্রতিবাদী কবি হিসেবে খ্যাত রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৭৫ সালের পরের সবকটি সরকার বিরোধী ও স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধ, দেশাত্মবোধ, গণআন্দোলন, ধর্মনিরপেক্ষতা, ও অসাম্প্রদায়িকতা তার কবিতায় বলিষ্ঠভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। স্বৈরতন্ত্র ও ধর্মের ধ্বজাধারীদের বিরুদ্ধে তার কণ্ঠ ছিল উচ্চকিত। তিনি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। তিনি ১৯৮০ সালে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।
‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয়, চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী। মোংলার মিঠাখালির বুকে শুয়ে আছেন কবিতার এই জনক। প্রতিবছরই দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালন করা হয় কবির মৃত্যুবার্ষিকী। রুদ্র স্মৃতি সংসদ এর সভাপতি কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ এর ছোট ভাই সুমেল সারাফাত বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস এর কারণে এবারের মৃত্যু বার্ষিকী আমাদের ঘরোয়া পরিবেশে কুরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ করতে হচ্ছে।