আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় প্রয়াত রাজিব সরকারের স্মরন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, শুক্রবার উপজেলার নিজস্ব কার্যালয় গৈলা হোমল্যান্ড ডেপেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এইচডিও) এর উদ্যেগে প্রয়াত রাজিব সরকারের স্মরণ সভা সাহেব আলী সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন হোমল্যান্ড ডেপেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এইচডিও) এর নির্বাহী পরিচালক ও উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারন সম্পাদক কাজল দাশ গুপ্ত, কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ আলম মিঠু, নির্বাহী সদস্য মাইনউদ্দিন সরদার, জসিম সেরনিয়াবাত, সমন্বয়কারী গোপাল দাস, শাখা ব্যাবস্থাপক অধীর দাস, কার্ফা কর্ম এলাকার মাঠকর্মী সুমা কবিরাজ প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। প্রয়াত রাজিব সরকার গৈলা হোমল্যান্ড ডেপেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এনজিওতে সুপারভাইজার পদে চাকুরী করতেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ আক্টোবর ভারতের ব্যঙ্গালোর শাহিবাবা একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন রাজিব। স্ত্রী, নাবালক সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের শোক সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন উপজেলার উত্তর শিহিপাশা গ্রামের দিলীপ সরকার চানুর ছেলে রাজিব সরকার (২৮)। গত ২০ অক্টোবর রাজিবের মরদেহ ভারত থেকে বাংলাদেশে তার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তার মৃত্যুর খবর এলাকার সবাইকেই স্তব্ধ করে দিয়েছিল। তার লাশ বাড়িতে আনার পর একনজর দেখার জন্য তার এলাকার বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাংঙ্খী, আত্মীয়-স্বজন, জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের লোকজন তার বাড়িতে ভীর করেন। রাজিব ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্যনকারী ব্যক্তি। রয়েছে পিতা-মাতা ও ছোট দুই বোন। রাজিবের লাশ বাড়িতে আনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা সবাই শোকার্ত ও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদের সাথে পুরো গ্রাম শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। রাজিব অনেক সংগ্রাম করে পরিবারের দৈনন্দিন খরচ বহন করে লেখাপড়া শেষ করে ২০১৭ সালে গৈলা হোমল্যান্ড ডেপেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন এনজিওতে সুপারভাইজার পদে চাকুরী নিয়ে সংসার চালাতেন। রাজিবের স্কুল জীবনের সহপাঠী মিতু রানী সরকার ভালবাসার মানুষটিকে জীবনসঙ্গীও করে নেয়। নিজের ঘর আলো করে তাদের সংসারে একটি ছোট্ট কন্যা সন্তানও জন্ম নেয়। সেই কন্যা শিশুর বয়স মাত্র সাত মাস। কিন্তু নিজের পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার দারপ্রান্তে এসেই শরীরে জমে থাকা মরন ব্যাধির যন্ত্রনাটা খুব চেপে ধরে। অনেক কষ্টে সাজানো ফুলের বাগানটায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য গেলেও ফিরলেন নিথর মরদেহ নিয়ে। তার মৃত্যুতে বাবা মা হারালো বেঁচে থাকার সম্বল একমাত্র পুত্র সন্তানকে। একমাত্র জন্ম নেয়া সাত মাসের ছোট্ট শিশুটি হারালো দুনিয়া সমতুল্য তার প্রিয় বাবাকে। আর নিজের সুখের ঠিকানা গড়ার জন্য স্ত্রী হারালো তার জীবনসঙ্গী আর সামনে চলার পথকে। তার একমাত্র কর্মস্থল গৈলা হোমল্যান্ড ডেপেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এইচডিও) এনজিও’র পরিচালক কাজল দাশ গুপ্ত হারালো একজন সৎ ও আদর্শবান এক দক্ষ কর্মীকে। আর তার প্রিয় সহপাঠী বন্ধুরা হারালো প্রানের প্রিয় বন্ধুকে। রাজিবের মৃত্যুতে এলাকার প্রতিবেশি আর শুভাকাংঙ্খীরা হারালো শান্তসৃষ্ট শান্তি প্রিয় মানুষকে।