
যশোরের বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে পুনরায় অক্সিজেন আসলো বাংলাদেশে।ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়লে ভারতীয় সরকার কোন রকম ঘোষণা ছাড়ায় গত ২০ শে এপ্রিল হঠাৎ বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। অথচ বাংলাদেশে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ টন অক্সিজেনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অক্সিজেনের চহিদা বেড়ে যায় বহুগুণে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে দেশের করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় প্রতিদিন অক্সিজেনের চাহিদা গিয়ে দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৫০০ টন। তবে ভারত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করলেও দেশে উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছিল।
সোমবার(৫জুলাই) সকালে দুটি ট্রাকে করে ১৯০টন অক্সিজেন বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছেছে। লিন্ডা বাংলাদেশ লিমিটেড ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি এ অক্সিজেন ভারত থেকে আমদানি করেছেন। অক্সিজেনের চালানটি কাস্টমসের কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বেনাপোলে সারথী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিএন্ডএফ কাজের আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে রয়েছেন।
লিন্ডা বাংলাদেশ ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের প্রতিনিধি জিল্লুর রহমান বলেন, ২০ এপ্রিলের পরে তাদের কোম্পানির কোন অক্সিজেন দেশে প্রবেশ করেনি। ভারতের অক্সিজেন সংকট থাকার কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ করা বন্ধ রাখেন। ভারতে অক্সিজেনের চাহিদা কমে যাওয়ায় আবার ভারতীয় সরকার অক্সিজেন রপ্তানিতে সম্মতি দিয়েছে। আজকে আমাদের কোম্পানির ১৯০টন টোন অক্সিজেন বেনাপোল বন্দরে এসে পৌছেছে। এখন থেকে প্রতিদিনই ভারত থেকে এ কোম্পানির অক্সিজেন বাংলাদেশ আসবে।
অক্সিজেন চালান কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের দায়িত্বে থাকা বেনাপোলের সারথি এন্টারপ্রাইজের মালিক ও বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ভারতে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়ায় অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। এমনকি ভারতে অক্সিজেনের চরম সংকট তৈরি হয়। যে কারণে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখে। ভারতে করোনা পরিস্থিতি একটু উন্নতি হওয়ায় সরবরাহ প্রতিষ্ঠানটি আবারও বাংলাদেশ অক্সিজেন সরবরাহ করা শুরু করেছে। এর ফলে আজ সকালে ভারত থেকে ৯০টন অক্সিজেনের একটি চালান বেনাপোল বন্দরে এসে পৌছেছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এর ফলে বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েই চলেছে। যে কারণে জরুরী পণ্য সরবরাহের তালিকায় থাকায় দ্রুত কাস্টমসে কার্যাবলি সম্পাদন করে অক্সিজেনের চালানটি দ্রুত খালাস করে সংশ্লিষ্ট মালিকের কাছে পৌঁছানো হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, গত এপ্রিলে ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারী রূপে ছড়িয়ে পড়লে ভারত সরকার হঠাৎ করে বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি করা বন্ধ করে দেয়। পরপরই বাংলাদেশ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে চরম অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। ২১ শে এপ্রিলের পর বাংলাদেশ আর কোন অক্সিজেনের গাড়ি প্রবেশ করেনি। একপর্যায়ে আজ সোমবার সকালে আবারো কয়েকটি অক্সিজেনের গাড়ি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যমতে দেশের করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় প্রতিদিন অক্সিজেনের চাহিদা গিয়ে দাঁড়ায় ৩০০ থেকে ৫০০ টন। তবে ভারত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করলেও দেশে উৎপাদিত অক্সিজেন দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছিল।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র গত ২১ এপ্রিলের আগে এক সপ্তাহে ৪৯৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছিল। এর আগে প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে থাকে দেশে। করোনাকালীন আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সম্প্রতি এ অক্সিজেনের চাহিদা আরও বাড়ে।
Please follow and like us: