
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৪৪ বিলিয়ন রপ্তানির বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৭১ বিলিয়ন। কোভিড ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্ব যখন একটু একটু করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ঠিক তখনই টালমাতাল অর্থনীতি সম্মুখীন হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক খাত এবং রেমিটেন্সে। দুটোই আসে ডলারে।
সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেলের স্বল্পতা, মূল্যবৃদ্ধি, রিজার্ভ কমে যাওয়া ইত্যাদি কারনে তীব্র ডলার সংকটের দেখা দেয়। আমদানি-রপ্তানির স্বাভাবিক প্রবাহ ঠিক রাখতে এক্ষেত্রে বিকল্প মুদ্রা হিসেবে চায়না ইউয়ান এবং ভারতীয় রুপির কথা বিবেচনায় আসে। ইউয়ান মুদ্রায় চীনের সাথে লেনদেনের অর্থ হচ্ছে ডলারকে পাশ কাটিয়ে লেনদেন করা। সেক্ষেত্রে ডলারের উপর অনেকটাই চাপ কমবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইউয়ান মুদ্রায় অ্যাকাউন্ট খোলার একটি সার্কুলার এই ধারনাকে আরো বেশী পাকাপোক্ত করেছে।
চীনের মুদ্রায় লেনদেন করার দুটি বড় বাধা হচ্ছে প্রথমত মুদ্রার মান কিভাবে ঠিক হবে আর দ্বিতীয়ত ইউয়ানের যোগান। বাংলাদেশ চীনের সাথে আঠারো বিলিয়ন আমদানির বিপরীতে মাত্র হাফ বিলিয়ন রপ্তানি করে থাকে। সেক্ষেত্রে লেনদেনের জন্য পর্যাপ্ত মুদ্রা পাওয়া যাবে না। যা ডলার দিয়ে কিনতে হবে। ফলত, দৃশ্যমান কোন উন্নতি হবে না। যেহেতু বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্পের প্রধান বাজার ইউরোপ এবং ইউএস সেক্ষেত্রে ডলারের সাথে টাকা এবং ইউয়ানের রেট এবং রপ্তানিতে পেমেন্ট জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
সব মিলে পুরোপুরি না হলেও আংশিকভাবে বিকল্প মুদ্রা হিসেবে ইউয়ানে লেনদেন চালু রেখে কিছুটা ডলার সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব। পক্ষান্তরে, রুপি হিসেবে খুব বেশি প্রভাব ফেলার জায়গা নেই। যেহেতু ভারতের সাথে আমাদের আমদানি নির্ভর বানিজ্য এবং মুদ্রা হিসেবে রুপি এখনো যথেষ্ঠ শক্তিশালী না।
[লেখক : মেহেদী হাসান, শিক্ষার্থী- মার্কেটিং বিভাগ, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, এবং গারমেন্ট প্রফেশনালিস্ট , এক্সপোর্ট অরিয়েন্টেড গারমেন্ট ফ্যাক্টরী ]