
নিজস্ব প্রতিবেদক-আশাশুনি উপজেলার শীতলপুর গ্রামে এক গৃহবধু স্বামী-শ্বশুর ও শ্বশাড়ির নির্মম নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়েছেন। যন্ত্রনায় কাতর গৃহবধু তাছলিমা হাসপাতালের বেডে কেঁদে কেঁদে সময় পার করছেন। কুল্যা ইউনিয়নের মাদারবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল করিমের কন্যা আহত তাছলিমা, তার মা ও পিতা রেজাউল জানান, ২০০৭ সালে তাছলিমার সাথে শীতলপুর (বারদহ) গ্রামের শওকত সরদারের পুত্র ইদ্রিসের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ ৩০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। একবছর পর থেকে আবারও যৌতুকের দাবী করতে থাকে। বিদেশ থেকে ফেরৎ আসা পিতা একে একে ৩ লক্ষাধিক টাকা জামাইকে দিয়ে মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু যৌতুক লোভি স্বামী, শ্বশুর-শ্বাশুড়ির মনতুষ্ট করতে পারেননি। ফলে স্ত্রীর উপর নির্যাতন হতে থাকে। শহরে রিক্সা চালাতে গিয়ে ইদ্রিস পরকীয়ায় পড়লে এনিয়েও দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে তছলিমা কয়েকবার পিত্রালয়ে চলে যায়। মেম্বার, মাতব্বর ও ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৬/৭ বার শালিসী মিমাংসায় তছলিমাকে স্বামীর বাড়িতে পাঠনো হয়। গত ২ অক্টোবর চার্জার ভ্যান কিনতে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে স্ত্রীর উপর নির্যাতন করা হয়। স্বামী-শ্বশুর-শ্বাশুড়ি মিলে নির্মমভাবে মারপিট, গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা ও মাথার চুল ধরে মাথা মেঝে ও খুঁটির সাথে ধাক্কা দিয়ে নির্যাতন চালান হয় বলে তারা অভিযোগ করেন। এমনকি বস্তাভরে নদীতে ফেলে মেরে ফেলানোর হুমকীও দেওয়া হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তছলিমা কাতর হয়ে পড়েন। পরদিন সকালে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও স্বামী বাইরে গেলে পাশের বাড়ির লোকজন সুযোগ বুঝে পিছন দিক দিয়ে তাকে লুকিয়ে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে আশাশুনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাছলিমা এখন বারবার বমি করছে, কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। তাছলিমা জানান, এক বছর আগে তার মুখে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। ৬ মাস আগে শ্বশুর গলায় দা ধরে হত্যা করতে গিয়েছিল। দু’টি সন্তানকেও তার থেকে কেড়ে নিয়ে তাদেরকে কথা বলতে দিত না। এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, কয়েকবার শালিস করা হয়েছে এবং তিনি নিজেও তাকে পিতার বাড়ি থেকে মিমাংসা করে নিয়ে এসেছিলেন বলে স্বীকার করে বলেন, সর্বশেষ ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেননা।