আতিকুর রহমান নগরী-
‘রমজান সেই মাস যে মাসে নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েত এবং পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ আর ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্যকারী’ (সূরা: বাকারা/১৮৫)। আমরা সাধারণত মনে করে থাকি রমজান মাসের বৈশিষ্ট্য শুধু ‘রোজা রাখা আর তারাবিহ পড়া। এগুলো রমজানের প্রধান দু’টি ইবাদত। এ ছাড়াও রয়েছে ভিন্ন এক উদ্দেশ্য। যেমন আল্লাহ পাক মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের উপর রোজা ফরজ করেছি যেমনিভাবে করেছিলাম তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর- যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো’। সুতরাং রমজানের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন। বিগত বছরের সকল পাপাচার থেকে মুক্ত করে তোলাই হচ্ছে এ মাসের প্রধান পয়গাম। মাসটির ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে হযরত সালমান ফারসি (রা.) বলেন, একবার নবী করিম (সা.) শাবানের শেষ তারিখে আমাদের সম্বোধন করে বলেন, “হে মানবজাতি! তোমাদের মধ্যে এমন একটি মোবারক মাস উপস্থিত হয়েছে যে মাসটির মাঝে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। মানব জাতির ধর্মীয় গ্রন্থ আল-কোরআন যে মাসে নাজিল হয়েছে এটা অবশ্যই কারও অজানা নয়। আর অজানাদের জন্য আল্লাহ পাকের ঘোষণা রয়েছে ‘রমজান সেই মাস যে মাসে নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েত এবং পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশ আর ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্যকারী’।
রমজান মাস হচ্ছে মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল।
রোজাদার ইবাদতের মাধ্যমে রমজানকে কাজে লাগাতে পারলে একটি রমজানই জীবনের সফলতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। রমজানের প্রতিটি ইবাদতের জন্য ন্যূনতম ৭০ গুণ বেশি সওয়াবের ঘোষণা রয়েছে। রোজাদারের জন্য উচিত হলো বেশি বেশি নফল ইবাদতে মনোনিবেশ করা। গরিব-দুঃখীর পাশে দাঁড়ানো রমজানের অন্যতম লক্ষ্য। রোজা ফরজ করার একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হলো দুস্থ ও অসহায় মানুষের ব্যথানুভূতির। যারা প্রাচুর্য্যরে খনিতে বাস করেন তারা এ মাসে গরিব-দুঃখীর ব্যথা কিছুটা হলেও বোঝেন। রমজানের দাবি হচ্ছে, ওই সব লোকের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়া যাদের সেহরিতে এক মুষ্টি অন্ন ও গরিব-দুঃখীর পাশে দাঁড়ানো রমজানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ও লক্ষ্য।