উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা পারভীনকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। গতর্কাল তিনি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছেন। এর আগেরদিন বিকেলে অফিসার্স ক্লাব ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা যৌথভাবে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করেন। লোহাগড়া ইউএনওর কার্যালয়ে এ বিদায় সংবর্ধনা হয়। একই সভায় লোহাগড়ার নতুন ইউএনও মুকুল কুমার মৈত্রকে বরণ করে নেওয়া হয়। মুকুল কুমার মৈত্র সকালে নড়াইলের লোহাগড়ায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছেন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু ইউএনও মনিরা পারভীনকে হত্যার হুমকি দিয়েছেনÑএমন অভিযোগ করে মনিরা পারভীন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি করার পর থেকে তিনি সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারায় ছিলেন। সোমবার (২৩এপ্রিল) জিডিতে ইউএনও উল্লেখ করেন, সৈয়দ ফয়জুল আমির গত বছর ২৯ জুন কিছু প্রকল্প দেখিয়ে টাকার বরাদ্দ পেতে তাঁকে কিছু কাগজপত্রে সই করতে বলেন। কিন্তু প্রকল্পগুলো ভুয়া হওয়ায় তিনি সই করেননি। তাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ৩৯ লাখ টাকা ফেরত যায়। এ কারণে তাঁর সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও শত্রুতার সৃষ্টি হয়। চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে তাঁকে হুমকি দেন। বিভিন্ন সময় মুঠোফোনেও তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
ইউএনও বলেন, পরে তিনি জানতে পারেন, তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ জন্য তিনি থানায় জিডি দায়ের করেন।
জিডির ব্যাপারে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, জিডিতে উল্লেখিত ইউএনওর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, এই মর্মে গত ২৫ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এখন আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
জেলা প্রশাসক এ জিডির বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গত ১ মার্চ প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেয়। আগামী ৯ মে সকাল ১০টায় সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কার্যালয়ে হাজির হয়ে জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে।