
নয়া আলো ডেস্ক- হোটেল আর্টিজান থেকে উদ্ধার হওয়া ১৩ জনকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই তারা গোয়েন্দাদের হেফাজতে রয়েছেন।
গত শুক্রবার রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। পরদিন শনিবার ভোরে সেখানে অভিযান চালায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর কমান্ডো দল। ১৩ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে বন্দুকধারীরা নির্মূল হয়। পরে সেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় বের করে আনা হয় ১৩ জনকে। যার মধ্যে তিনজন বিদেশী নাগরিক রয়েছেন। বন্দিদশা থেকে উদ্ধারের পরই তাদের গোয়েন্দা হেফাজতে নেয়া হয়। তাদের সাথে কেউ কথা বলতে সক্ষম হননি। এমনকি স্বজনও তাদের সাথে কথা বলতে পারেননি।
উদ্ধারের পরই তাদের মিন্টু রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয় বলে জানা যায়। আজ রোববার দেখা যায় মিন্টো রোডের দুই পাশ বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। যানবাহন এবং সাধারণ পথচারীদেরও ওই রোডে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এ রোডে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর বাসাও রয়েছে। কিছু যানবাহন তল্লাশির পর ডিএমপি সদর দফতরের পাশ দিয়ে মিন্টো রোডে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। এত নিরাপত্তার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাস্তায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরে জানা গেল আর্টিজান থেকে উদ্ধারকৃত বন্দীদের মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। এ কারণে সেখানে এত কড়াকড়ি।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বললেন, যারা ওখানে ছিলেন তারা কী দেখেছেন তাই জানার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এত কঠোর নিরাপত্তা কেন? এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা। জানা গেছে, পুলিশ যাচাই-বাছাইয়ের চেষ্টা করছে মুক্তদের মধ্যে কেউ জঙ্গি দলের সদস্য আছে কি না। এ দিকে একটি সূত্র বলেছে, হোটেলের সিসি ক্যামেরার ছবিতে মাথায় টাকওয়ালা এক ব্যক্তিকে দেখা গেছে, যার ছবি বন্দুকধারীদের সাথেও রয়েছে। হামলার সময় তাকে রেস্তোরাঁর দরজায় দেখা গেছে বলে ওই সূত্রটি জানায়।
এ দিকে গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, বন্দুকধারীদের সবাই নিহত হয়েছে কি না সে সম্পর্কে এখনো সন্দেহ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রথমে বলেছিলেন, বন্দুকধারীদের দলে আটজন দেখা গেছে। পরে জানা গেল সাতজন। অভিযানের পর জানা গেল ছয়জন। এখন জানা যাচ্ছে পাঁচজন। নিহত ছয়জনের মধ্যে একজনের লাশ হলো ওই রেস্তোরাঁর বাবুর্চির।
এ দিকে এ ১৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ চললেও গতকাল মিন্টো রোডে তাদের কোনো স্বজনকে লক্ষ করা যায়নি। একটি সূত্র বলেছে, উদ্ধারকৃতদের স্বজনেরাও এখন চরম উৎকণ্ঠায় আছেন। যে কারণে উদ্ধারের পরও অনেকে তাদের স্বজনের সাথে যোগাযোগ করেননি। যে দু’চারজন আর্টিজানের পাশে গিয়েছিলেন তারাও স্বজনের সাথে কোনো কথা বলতে পারেননি।