নয়া আলো- চট্টগ্রামে মাহমুদা আক্তার মিতু খুনের ঘটনায় মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় এসপি বাবুল আক্তারের নিজ বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পুত্রবধূ খুনের ঘটনা এসপি বাবুল আক্তারের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ ও মা শাহিদা বেগম কোনা ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। প্রিয় পুত্র বধূর নির্মম এই হত্যাকান্ডে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। অবসর প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ পুত্র বধূর নানা স্মৃতি তুলে ধরে বিলাপ করছেন আর বলছেন, ‘মিতু পুত্রবধূ হলেও সে ছিল আমার মেয়ের মতো। সে আমাকে খুব ভালো বাসতো, বাবার মতো ইজ্জত করতো। তার বাসায় গেলে আসতে দিতে চাইতো না।’ কান্না জড়িত কণ্ঠে ওয়াদুদ বলেন, ‘গত মাসে শেষ বার চট্রগ্রামে তার বাসায় গিয়েছিলাম। মিতুর জোরা জুরিতে সপ্তাহ খানেক ছিলাম। এবার এক সাথে ঈদ করার কথা ছিল। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল।’ছেলের সততার কথা তুরে ধরে তিনি বলেন, ‘বাবুল নির্লোভ মানুষ। আল্লাহ কেন তাকে এমন শাস্তি দিলেন! এখন তার দুইটা বাচ্চা এতিম হয়ে গেল। ছোট বাচ্চা দুইটা মা ছাড়া কীভাবে থাকবে?ওয়াদুদ এই হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার দাবি করেন।এসপি বাবুল আক্তারের মা শাহিদা বেগম পুত্রবধূর শোকে অঝোরে কাঁদছেন আর নানা স্মৃতিচারণ করছেন। তিনি বলেন, ‘পরিবারের সব সদস্যকে সে আপন করে নিয়েছিল। শুধু পরিবার নয় সাধারণ মানুষকেও ভালবাসতো। রোজা উপলক্ষে পুত্রবধূ মিতু গতকালই কাপড়, চিনি, সেমাই, তেল পাঠিয়েছে। ঈদের আগে বাড়ি আসার কথা ছিল। সবাই তার অপেক্ষায় ছিল।’ এসপি বাবুল আক্তারের ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান লাবলু জানান, তার ভাবি মাহমুদা আক্তার মিতু ঢাকার রাজধানীর বনশ্রী ভূঁইয়া বাড়ি এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ ইনসপেক্টর মোশাররফ হোসেনের মেয়ে। ঢাকা হোম ইকনোমি কলেজ থেকে এমএ পাস করে । মিতু ছিলেন একজন খাঁটি গৃহিণী। ভাইয়ের চাকরির সুবাদে তিনি দুই সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। স¤প্রতি ভাই বাবুল আক্তার এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় বদলি হয়েছেন। এদিকে, মিতু এ হত্যাকান্ডে খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশী ও শুভাকাক্ষীরা সমবেদনা জানাতে মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় বাবুল আক্তারের বাড়িতে ভিড় করেন। মাগুরার পুলিশ সুপার একেএম এহসান উল্লাহ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সস্ত্রীক বাবুল আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মার প্রতি সমবেদনা জানান। এসপি বাবুল আক্তারের মূল বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম শৈলকুপা উপজেলার ফাদিলপুর গ্রামে। বাবা অবসর প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আব্দুল ওয়াদুদ মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় বাড়ি নির্মাণ করেন। গত প্রায় ২০ বছর ধরে আব্দুল ওয়াদুদ স্ত্রী শাহিদা বেগম, ছোট ছেলে অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রীকে নিয়ে মাগুরা শহরে বসবাস করছেন। বাবুল আক্তার চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে চট্রগ্রামে থাকতেন।