হোসনে মোবারক নিশাত,দাগনভূঁঞা থেকে: ডাক্তার মানেই আরোগ্যতা, ডাক্তার মানেই আস্থা। কিন্তু এর বহু চিত্র বিভিন্ন সময় মিডিয়াতে সংবাদ ছাপা হয়েছে যে, ডাক্তারের অবহেলায় অথবা ভূয়া ডাক্তারের খপ্পরে পড়ে ভূল চিকিৎসার কারণে প্রসূতি কিংবা নবজাতকের মৃত্যু সহ অন্যান্য রোগী মারা গেছে। প্রিয় মানুষ হারানোর ক্ষোভে সাধারন মানুষ হাসাপাতাল, ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারে হামলা সহ ভাংচুর করেছে। মানুষের জীবন বাচাঁনোর শেষ অমৃত আজ যেন বিষ হয়ে দাড়িয়েছে।
এমনটাই দেখা গেছে দাগনভূঞায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠা ডাক্তার নামধারী জেনারেল প্র্যাকটিশিয়ানরা কয়দিন পরই এম.বি.বি.এস এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রাইভেট চেম্বার খুলে চেয়ারে বসে রমরমা ব্যাবসা করে যাচ্ছেন। কেউ আবার ভারতের কলকাতা সহ বিভিন্ন দেশের ডিগ্রির নাম লাগিয়ে এম.বি.বি.এস ও ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিচ্ছেন। যদিও এতদ বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল কাউন্সিলের অনুমোদন অবশ্যই প্রয়োজন। সম্প্রতি ভূঁয়া হাতুড়ে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ফেনী শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট প্রসাশন থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে জরিমানা করায় দাগনভূঞার সাধারন মানুষও তাকিয়ে আছে জেলা প্রশাসনের দিকে। বিশেষজ্ঞ ও এম.বি.বি.এস ডাক্তার পরিচয়ে বছরের পর বছর ভূঁয়া চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবার নামে সাধারন মানুষকে নিরবে মৃত্যুর ফাদে ঠেলে দিচ্ছে এবং হাতিয়ে নিচ্ছে সাধারন মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা যা দিয়ে তারা হচ্ছেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। অনুসন্ধানে জানা যায়, দাগনভূঞা চক্ষু হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামে হাসপাতালে ডাক্তার সেজে রোগীদের চিকিৎসা করে যাচ্ছে হাসপাতালের মালিক ইউসুফ।
যিনি এর আগে পাহাড়তলি চক্ষু হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ছিলেন পরবর্তীতে চুরির দায়ে চাকুরী হারান। তাছাড়া হাসপাতালটির সাইনবোর্ডে ৫/ ৬ জন ডাক্তারের তালিকা থাকলেও বাস্তবিকপক্ষে ১জন ছাড়া আর কেউ নাই। চোখের নানা গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন ও করে সে। তাছাড়া হাসপাতালে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কোন সেবিকাও নেই। অথছ বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বি.এম.ডি.সি) ১৯৮০ সালের এবং ২০১০ সালের (সংশোধিত) আইন মোতাবেক শুধু নিবন্ধনকৃত চিকিৎসকরাই (এম.বি.বি.এস ও বিডি.এস ডিগ্রিদারীরাই) নামের আগে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারেন।
অন্যথায় উক্ত আইন লংঘন করার অপরাধে উল্লেখিত আইন অনুযায়ী দন্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীদের আর্কষ্টে তার রয়েছে চমকপ্রদ ভিজিটিং কার্ড, চিকিৎসাপত্র,ডিজিটাল মাইকিং ও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারনা করছে। তবে ভূয়া এ সব ডাক্তারদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষকে কে রক্ষা করবে তা আজ একটি প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। তার অপচিকিৎসার ফলে শিকার হচ্ছেন সহজ সরল সাধারন মানুষ। এমতাবস্থায় সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অনতি বিলম্বে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসন উক্ত বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন। একই সাথে সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সমাজের এই ক্যান্সার ধমনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবেন। প্রসঙ্গত,কথিত ডাক্তার মোঃ ইউসুফের বিরুদ্ধে জামায়াত ইসলামীর অর্থের যোগানসহ হাসপাতালের নার্সের সাথে শ্লীলতাহানির চেষ্টাসহ আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে।