রাজশাহী সদর হাসপাতালকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত জুলাইয়ের শুরুতে ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। এরপর প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় সংস্কার কাজ।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন ইউনিট, ১৫০টি সাধারণ শয্যা ও ১৫ শয্যার আইসিইউ ইউনিট স্থাপন করে চালু করতে গত ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ‘নানা জটিলতা ও সমন্বয়হীনতায়’ সংস্কার কাজ চলতি বছরের জানুয়ারিতে এসেও শেষ হয়নি। ফলে করোনা রোগীর সংখ্যা আবার যখন বাড়তে শুরু করেছে সেই সময়ে এই সদর হাসপাতাল ‘করোনা ডেডিকেটেড’ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এবং বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল (শজিমেক) কলেজ হাসপাতাল ছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আর কোথাও করোনা চিকিৎসার ভালো ব্যবস্থা তেমন নেই। এই পরিস্থিতিতে রামেক হাসপাতালে গত বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় ভয়াবহ চাপ তৈরি হয়। তখনই রাজশাহী সদর হাসপাতালকে ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত হয়।
সদর হাসপাতাল সংস্কার কাজে দায়িত্বরত ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এখানে দুইটি টেন্ডারের কাজই শেষের পথে। চলমান সংস্কার শেষে প্রয়োজনীয় উপকরণ পেলে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হবে।
রাজশাহী বিভাগীয় (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার ও রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রাজিউল হক সাংবাদিকদের বলেন, রামেক হাসপাতালে করোনা রোগী বেশি হলে সদর হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হবে।
এদিকে করোনার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শেষের আগেই আবারও তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বর্তমানে এখানে প্রতিদিন ড়ে ২৫ থেকে ৩০ করোনা রোগী ভর্তি থাকছে। করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে১০টি আইসিইউসহ ৬৬টি বেড। তিনি বলেন, পরিস্থিতির বেশি অবনতি হলে রামেক হাসপাতালেও চলবে করোনা রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম। এছাড়াও রাজশাহী সদর হাসপাতাল প্রস্তুত হলেই ‘করোনা ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু করা হবে। তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় এখনো করোনা রোগীর সংখ্যা কম। তাই সব করোনা ও উপসর্গের রোগীকে সেখানেই পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা রামেক থেকে দেওয়া হবে। সেখানে ধারণক্ষমতার চেয়ে রোগী বেড়ে গেলে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে হবে সংস্কারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সমন্বিত বৈঠক সম্ভব হচ্ছে না।