মোঃ আউয়াল হোসেন পাটওয়ারী, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ২শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। কলাগাছ ও বাঁশের কঞ্চির তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনার দিয়েই পালিত হয় মাতৃভাষা দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পলিত হলেও ভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর পরও রামগঞ্জের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মিত না হওয়ায় ভাষা শহীদদেরপ্রতি যথাযথ ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে সমস্যা হয় শিক্ষার্থীদের।
উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬১টি, মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৫টি, মাদ্রাসার সংখ্যা ২৬টি, কলেজের সংখ্যা ৬টি সহ মোট ২২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠনে প্রায় লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। মহান ভাষা আন্দোলনের ৬৬বছর পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ২৫টি মাদ্রাসাসহ পশ্চিম শোশালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম কাজিরখীল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য আংগারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আথাকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেহলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেহলা বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাগমুদ বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নাগমুদ মজিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউগানখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোন্দড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ নারায়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম ভাদুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগৎপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২শতাধীক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত শহীদ মিনার নির্মান করা হয়নি। ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি বছরই অনেক কষ্ট করে অন্য স্কুলে গিয়ে মহান মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। এতে করে প্রত্যেক বছরই বহু শিশু অনেক দুরে হেটে আসা-যাওয়া করায় অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শহীদ মিনার না থাকা কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকগন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, শহীদ মিনার না থাকায় ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদেরকে দূরবর্তী অন্য স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়।এতে অনেক সময় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমাদের দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মহান মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উপজেলার প্রত্যেকটি স্কুলে বাধ্যতামূলক শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ দৌলতের রহমান জানান, ১৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরিতে শীগ্রই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, মাসিক সমন্ময় সভায় আমরা এব্যপারে উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি নির্দেশনা পেয়েছি। শীগ্রই প্রত্যকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু ইউসুব জানান, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই, সেগুলো চিহ্নিত করে এবং যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবহেলিত অবস্থায় আছে সেগুলোর বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলার প্রত্যকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা অফিসগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।