
পারভেজ,কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি ঃ
পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মহল্লাপাড়া গ্রামের বাসীন্দা নিম্ন আয়ের মানুষ জাহাঙ্গীর হোসেন আকন। তার জীর্ণদশার ঘরটি অধিগ্রহণের আওতায় নেয়া হয়েছে। ক্ষতিপুরনের এওয়ার্ড নোটিশে তাকে ৫৯ হাজার চার শ’ টাকা দেয়ার চিঠি পেয়েছেন। যার নম্বর ১২৬৮, তারিখ ১৬-০১-১৮। এ পরিমাণ টাকা উত্তোলনের জন্য এই মানুষটি পটুয়াখালী এলএও অফিসে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে একই এলাকার মস্তফা ফকির, নুর ছাহেদ পাহলান, শাহজাহান, আব্দুল কাদের, সুলতান ও নজরুল প্যাদা। কিন্তু সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলামসহ তার এক সহযোগী সোজাসাপটা নোটিশে ধার্য্য করা টাকার শতকরা ১০ভাগ দাবি করে সবকিছু ঠিক করে দেয়ার কথা বলে দেয়। সাধারণ মানুষ প্রায় শত বছরের বসতভিটা, চাষাবাদের জমি ছেড়ে দিয়েছেন সরকারের উন্নয়ন কাজে। তারা এখন ক্ষতিপুরনের টাকা তোলার জন্য গিয়ে হয়রানি এবং উৎকোচ দাবির ঘটনায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।এভাবে লালুয়ার অপর মৌজার ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি ও ভূমির মালিকরা একটি মধ্যস্বত্তভোগী চক্রের ফাঁদে আটকা পড়ে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চিহ্নিত কয়েক জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। এরা মাঝখান দিয়ে এসব নিরীহ মানুষকে হয়রানি করায় চরম বিপাকে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। ক্ষতিপুরনের টাকা পেলে অন্যত্র গিয়ে একটি ঘর তুলে নতুন ঢেরা পাততে পারতেন। কিন্তু তা চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে। ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯ টাকা ৪৫ পয়সার ক্ষতিপুরনের নোটিশ পেয়ে মহল্লাপাড়া গ্রামের নুর ছাহেদ পাহলানও এমন বিপাকে পড়েছেন। একই দশা নয় লাখ ৩৪ হাজার ৪৫৫ টাকা ৭১ পয়সার এওয়ার্ড নোটিশ পাওয়া মস্তফা ফকিরের। দুর্ভোগে রয়েছেন এভাবে লালুয়া ছাড়াও বানাতি মৌজার আট শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। কৃষক ও জেলে পেশার অধিকাংশ মানুষের বসতি লালুয়ায়।নৌবাহিনীর ঘাটিসহ পায়রা পোর্টের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে বাড়িঘরসহ কৃষিজমি। কিন্তু মানুষ সহজভাবে ক্ষতিপুরনের টাকা না পাওয়ায় এখন তারা চরম ক্ষুব্ধ রয়েছেন। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ড. মাছুমুর রহমানের নির্দেশনায় কিছু মানুষকে কলাপাড়ায় বসে ক্ষতিপুরনের চেক প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু এরপরও সুযোগ বুঝে মধ্যস্বত্তভোগীচক্র হানা দেয় এসব দরিদ্র মানুষকে হয়রাণি করতে থাকে। এচক্রটি এতোটা সক্রিয় যে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। সরকারি দলের একটি চক্র এই মধ্যস্বত্তভোগী চক্রের শেল্টারদাতা হিসেবে এলাকায় চিহ্নিত হয়ে আছেন। অভিযুক্ত সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত কোন মানুষকে কোন ধরনের হয়রানির সঙ্গে জড়িত নন।
এ ধরনের কোন কাজের সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। কেউ এ ধরনের কোন প্রমাণ দিতে পরবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। কলাপাড়ার ইউএনও মোঃ তানভীর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে- অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের হয়রাণির সঙ্গে জড়িত থাকার কারও প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোপূর্বে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ নির্বিঘ্নে তার প্রদত্ত চেক পাবে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর কোন ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই।