
কলাপাড়া প্রতিনিধি :
ঘাতক স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ দিন মৃত্যুর সাথে লাড়াই করে সোমবার ভোর রাতে মৃত্যুর কাছে হারমেনেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামেরফাতেমা বেগম সনিয়া (২২)।বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ওয়ার্ড মাস্টার আবল কালাম নিশ্চিত করেছেন।ফাতেমার বেগম সনিয়ার মা তাসলিমা বেগম জানায়, তারমেয়ের লাশ বরিশাল ময়নাতদন্তের পর রাতে কলাপাড়া নিয়ে আসা হবে।স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার দায়ে নিহতের মা তাছলিমা বেগম ঘাতক স্বামী সোবাহান গাজী (৩০), শ্বশুড় ইউসুফ গাজী এবং শ্বাশুড়িকে আসামি করে গত ২৫ মে রাতে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে।গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ওই রাতেই পুলিশ সোবাহান গাজীকে গ্রেপ্তার করে।আদালতে তাকে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালতের নির্দেশে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া থানার ওসি জি.এম. শাহনেওয়াজ।হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, আগুনে সনিয়ার শরীরের৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এমনকি ত্বকের পাশাপাশি শরীরের ভিতরের অংশেও আগুনের ব্যাপক প্রভাব পরেছে। যার জন্য তার গর্ভের পাঁচ মাসের শিশুটিরও মৃত্যু হয়েছে।গত ২৫ মে ফাতেমার উন্নত চিকিৎসার জন্য শেবাচিম হাসপতালের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পরার্মশ প্রদান করেছিলো। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের পক্ষে অর্থনৈতিক যোগান দিয়ে রোগীর চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে পারেনি।পরিবারের সদস্যরা জানায়, তিন বছর আগে কলাপাড়া পৌরশহরের নতুন বাজার এলাকার হারুনের মেয়ের সাথেটিয়াখালীর ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের ইউসুফেরপুত্র সোবাহানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সোবাহান যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালাতো।ফাতেমার দাদি হাসিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ফাতেমাকে পুড়িয়ে হত্যার জন্যই গায়ে আগুন লাগানোহয়েছিলো। স্বামীর নির্যাতনের প্রভাব মুক্তির জন্য দুই বছর তিন মাস বয়সী বড় কন্যা রূপাকে ফাতেমা তার দাদি হাসিনার কাছে রাখত। হাসিনা পৌরশহরের নতুন বাজারে থাকেন।২৪ মে বুধবার ফাতেমা তার মেয়ে রুপাকে দেখতে দাদির কাছে যায় ফাতেমা। এনিয়েও রাতে ঝগড়া হয় তারস্বামীর সঙ্গে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জ¦লন্ত সিগারেট ফাতেমার গালে চেপে ধরে। সিগারেটের ছ্যাকায় পুড়ে যায় গাল। তখনই তাকে হুমকি দেয় পুড়িয়ে মারার।এরপর বৃহস্পতিবার ২৫ মে সন্ধ্যার পর পূর্বক্রোধের কারণে ম্যাচে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়ফাতেমার শরীরে। প্রতিবেশীরা ফাতেমার শরীরর আগুন নিভিয়ে দ্রুত কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করায়। রাতেই তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিমে প্রেরন করেন চিকিৎসকরাকলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ জানান, এঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। পাষন্ড স্বামী সোবাহানকে গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালজিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করার পর ঘাতক স্বামী সোবাহান পাঁচদিনের রিমান্ডে রয়েছে।