বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনার এবং পবিত্র কুরআনের নির্দেশিত পথে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতির সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বানের মধ্য দিয়ে আহমদীয়া মুসলিম জামাত যুক্তরাজ্যের ৫৭তম বার্ষিক জলসা সমাপ্ত হয়েছে। ২৮ জুলাই শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ৪:২৫ মি. এ (বাংলাদেশ সময় রাত ৯:২৫মি.) বিশ্বের দুইশতাধিক দেশের জাতীয় পতাকার সাথে আহমদীয়া জামা’তের পতাকা উত্তোলন ও দোয়ার মাধ্যমে জলসার উদ্বোধন করেন নিখিলবিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের খলীফা হযরত মির্যা মাসরূর আহমদ (আই.) আর ৩০ জুলাই স্থানীয় সময় বিকেল ৬:০০ টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায়) সমাপ্তি ভাষণ ও দোয়ার মাধ্যমে জলসার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাজ্যের এই বৃহত্তম মুসলিম সম্মেলনে সমবেত হয়েছিলেন প্রায় ৪২ হাজার আহমদী মুসলিমগণ। এবারের জলসার বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আহমদীয়া সদস্যগণের ভার্চুয়াল অংশগ্রহণ। বাংলাদেশের আহমদীয়া সদস্যরাও এ সৌভাগ্য লাভ করে।
জলসায় বিভিন্ন বক্তাগণ মহানবী (সা.)-এর অনুপম আদর্শ, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় আহমদীয়া খলীফাগণের প্রয়াস, আল্লাহর অস্তিত্বের বৈজ্ঞানিক প্রমাণ, বর্তমান যুগের সমস্যা সমাধানে ইসলামের শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। জলসার দ্বিতীয় দিনের বক্তব্যে আহমদীয়া খলীফা বিগত এক বছরে বিশ্বব্যাপী আহমদীয়া মুসলিম জামাতের কার্যক্রম ও অর্জিত সাফল্যের এক ঝলক তুলে ধরেন। গত এক বছরে বিভিন্ন ধর্ম গোষ্ঠি থেকে ২ লক্ষ ১৭ হাজার ১৬৮জন মানুষ নতুন বয়আত করে আহমদীয়া জামাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
জলসার সমাপ্তি বক্তব্যে আহমদীয়া খলীফা পবিত্র কুরআনের আলোকে সমাজে সকল শ্রেণিগোষ্ঠির অধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করে ইসলাম বিদ্বেষী এবং ধর্মবিদ্বেষীদের আপত্তির জবাবে ইসলামের অনুপম সুন্দর শিক্ষা তুলে ধরেন। মহানবী (সা.) দরিদ্রদের প্রতি কতটা খেয়াল রাখতেন এবিষয়েও তিনি মহনাবীর আদর্শ তুলে ধরেন।
বক্তব্য শেষে তিনি সমগ্র বিশ্বের আহমদীদের শুকরিয়া আদায় করেন এজন্য যে, সময়ের পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা মনোযোগসহ এ জলসায় উপভোগ করেছেন। শেষে তিনি বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন।
বিশ্বের দুই শতাধিক দেশের আহমদীরা ভার্চুয়ালভাবে উক্ত জলসায় অংশগ্রহণ করেন।জলসা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভিডিও ও লিখিত বার্তা প্রেরণ করেন। উক্ত জলসায় বাংলাদেশের ন্যাশনাল আমীরসহ প্রায় ১৫জন প্রতিনিধি এবং পশ্চিমা বিশ্বে বসবাসকারী প্রায় ৩০জন প্রবাসী বাঙালী অংশগ্রহণ করেন।