সৈয়দ মুন্তাছির রিমন : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরের সেইফ ম্যাটারনিটি এন্ড সার্জিক্যাল ক্লিনিক ডেলিভারী রোগীকে অপারেশনের সময় ডাক্তারের অসতর্কতায় নবজাতক শিশুর হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় নবজাতকটি জীবন শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছে। ডেলিভারী ওই রোগীর অপারেশন করার দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ আই ই রেমা। বিষয়টি ওই ডাক্তার নিজেই স্বীকার করেছেন এবং নবজাতকটির চিকিৎসার জন্য সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেছেন।
জানা যায়, উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের দক্ষিণ রাউৎগাও (উজানপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা আরব আমিরাত প্রবাসী সুজন মিয়ার স্ত্রী পান্না বেগম অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হোন ১৩ জানুয়ারী শনিবার। ওইদিন রাত ৮টার দিকে অপারেশনের জন্য তাঁকে থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্লিনিকের ডাক্তার আর এ রেমা এই ডেলীভারি অপারেশনের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে নবজাতক শিশুটিকে তার নানী শেলী বেগমের কাছে হস্তান্তর করলে তিনি দেখতে পান নাতির হাত ভাঙ্গা। তাৎক্ষনিক তিনি ওই ডাক্তারকে বিষয়টি জানালে ডাক্তাররা নবজাতকের হাতে সাথে সাথে ব্যান্ডেজ করে দেন।
খবরটি জানার পর ১৪ জানুয়ারী রোববার সকালে শিশুটির আত্মীয় স্বজনরা ক্লিনিকে এসে জবাবদিহী চাইলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করে কাউকে না জানানোর শর্তে নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে নবজাতক শিশু, তার মা ও নানীকে ডাক্তার রেমা নিজেই একটি এ্যম্বুলেন্সে করে সিলেটে নিয়ে যান। শিশুটির নানী শেলী বেগমের সাথে রোববার দুপুর সোয়া ২টার দিকে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে অপারেশন করেন ডাক্তার রেমা স্যারে। ডেলীভারির সময় বাচ্চার হাত ভাঙ্গছে।
তিনি আরও বলেন, রেমা স্যারে আমরারে (শিশু, মা ও নানী) তান (উনার) গাড়ি দিয়া সিলেট পাঠাইছোইন। কোন হাসপাতালে পাঠাইছোইন আমরা জানি না। উনারা জানেন। এখনো আমরা রাস্তায়। এবিষয়ে অভিযুক্ত ওই ডাক্তার আই ই রেমার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, নরমাল ডেলীভারি হইছে। এসময় হাতে টান লাগিয়া হাতে ফ্রেকচার হইছে, হাড্ডি ফাটছে। তিনি বলেন, ভুল আমাদের হয়ে গেছে। এজন্য আমরা নিজেরাই চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আমি শিশুকে নিয়ে সিলেটের ক্রোমা হাসপাতালে আছি। ডাক্তার এসে সিদ্ধান্ত নিবেন। এবিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জাকির হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। তবে শিশুটির স্বজনরা কেউ যদি অভিযোগ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এবিষয়ে জেলা ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ বিলেন্দু ভৌমিক জানান, বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে জেনেছি। সিভিল সার্জন দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি আসার পর বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়াও জেলার প্রতিটি ক্লিনিক পরিদর্শণ করে কাগজপত্রাদি এবং নিয়ম মেনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখবো।