কুড়িগ্রাম থেকে, রাশিদুল ইসলাম ঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুর এমএস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম দিনে সিলেবাস জটিলতা ও নির্ধারিত সময় ক্ষেপণের কারণে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ।
জানা গেছে, চলতি এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় উলিপুর এমএস স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের ১২ নং কক্ষে ২০১৬ইং সালের সিলেবাস দিয়ে জোরপূর্বক ৭ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া হয়। উক্ত ৭ শিক্ষার্থীর ২০১৭ সালের সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। ওই কক্ষে দায়িত্বরত ইনডেক্স বিহীন প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেন ও কামরুজ্জামান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।
এ বিষয়ে প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্র যেভাবে সরবরাহ করেছেন আমরা সেভাবেই বিতরণ করেছি। মাধ্যমিক পরীক্ষায় কলেজ শাখার শিক্ষক দায়িত্ব পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদূত্তর দিতে পারেনি। সকাল ১০ টায় পরীক্ষা শুরুর নিয়ম থাকলেও ঐ কেন্দ্রের ১১, ২০ ও ২২ নং কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকগন খামখেয়ালীপনায় ২০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন। শিক্ষার্থীদের আর্তনাদে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মূর্তুজা আল মুইদ ওই কক্ষে ২০ মিনিট পর উত্তরপত্র সংগ্রহের নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি।
এব্যাপারে কক্ষে দায়িত্বরত প্রভাষক নাদিরা সুলতানা, শাহিনুর রহমান, শিক্ষক মাহবুবার রহমান, সুরাইয়া বেগম, তাজুল ইসলাম, মোখলেসুর রহমান, ভবেন চন্দ্র ও আঃ লতিফ জানান, কেন্দ্রের সচিব অধ্যক্ষ আঃ কাদের বিষয়টির উপর গুরত্ব না দেয়ায় এ জটিলতা সূষ্টি হয়েছে। উমানন্দ স্কুলের এক শিক্ষার্থী ২০১৬ সিলেবাসের প্রশ্ন পত্র পেয়ে চিৎকার করে গোলমাল সৃষ্টি করলে উলিপুর এম এস স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অপর শিক্ষক পূলক চন্দ্র ১ ঘন্টা পর ২০১৭ সালের সিলেবাসের প্রশ্ন পত্র সরবরাহ করে পরীক্ষা গ্রহন করেন।
বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বাংলা ২য় পরীক্ষার দিন শনিবার সকালে অভিভাবকগন পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে অবস্থান করলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযুক্ত কক্ষগুলো পরিদর্শন করে সত্যতার প্রমান পান এবং অভিভাবকদের আশ^স্ত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আঃ কাদের, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উলিপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সাঈদ সরকার, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকগন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী খাদেমুল ইসলাম, আঞ্জু আরা বেগম ও শাহরিয়ার কবির দূর্জয় ক্ষোভের সাথে বলেন, স্যারদের দায়িত্বহীনতার কারনে আশানুরুপ ফল না পাওয়ার আশঙ্কা করছি।
কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আঃ কাদের ঘটনাটির জন্য দূঃখ প্রকাশ করেন।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মূর্তুজা আল মুইদ অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য কেন্দ্র সচিবকে দায়ী করে দূঃখ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবগত করান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় এই কেন্দ্রে ইনডেক্স বিহীন প্রভাষকদের মাধ্যমে পরীক্ষা পরিচালনা করার সময় ওএমআর শীট সহ বোর্ডে খাতা প্রেরণ করলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ তলব করেন। পরে কেন্দ্র সচিব সহ অভিযুক্ত শিক্ষকরা ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান।