৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • সকল সংবাদ
  • কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২০ কোটি টাকার কাজ না করেই বিল উত্তোলন




কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে ২০ কোটি টাকার কাজ না করেই বিল উত্তোলন

মোহাম্মদ ইমন মিয়া, বাঙ্গরা,কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট।

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৪ ২০১৮, ১৯:২১ | 940 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

রাশিদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম থেকে ঃ
কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারদের সাথে আতাঁত করে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ খোদ শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বঞ্চিত ঠিকাদারদের। কিন্তু কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না। একক আধিপত্যের কারণে এ অফিসে স্বাভাবিক কার্যক্রম সর্ম্পুনরুপে স্থবির হয়ে পড়েছে। তার এ অনৈতিক কাজের অন্যতম সহযোগী রংপুর অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান এবং কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক আমান উল্লাহ। তাঁরা পারস্পরিক যোগসাজসে প্রায় ২০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে এ ঘাপলাবাজি করছে।
অভিযোগে জানা যায়, কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ফার্নিচার সরবরাহ কাজ না করেই অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেন মজুমদার মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের অধিকাংশ বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফার্নিচার সরবরাহ না করেই ফাইনাল বিল উত্তোলন করেছে একটি সিন্ডিকেট ঠিকাদারি চক্র। এর মধ্যে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শাহী বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নি¤œমানের প্লেন সিট দিয়ে তৈরিকৃত টেবিল, ব্রেঞ্চ ও অন্যান্য ফার্নিচার গ্রহন করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। ফলে নিয়োজিত ঠিকাদার বাধ্য হয়ে সেই ফার্নিচারগুলি ফেরত এনে কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল চত্ত্বরে স্তূপ করে রাখেন। যা আজবধি অবহেলা অযতেœ পড়ে আছে। পরবর্তীতে সিডিউল মাফিক কাজ তো দূরের কথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রকার ফার্নিচার সরবরাহ না করেই বিল উত্তোলন করা হয় গত বছর জুন ক্লোজিং এর সময়। একই রকম অভিযোগ, জেলার নাগেশ্বরী, চিলমারী, রাজারহাট, রাজিবপুর, রৌমারী সহ লালমনিরহাট জেলার ৫উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।
অনুসন্ধানে জানাযায়, গত বছর জুন ক্লোজিংয়ে শিক্ষা প্রকৌশল কুড়িগ্রাম জোনে চলে দুর্নীতির মহোৎসব। চলমান বর্তমান প্রায় ২০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে নি¤œমানের সামগ্রি দিয়ে। অভিভাবকহীন। যেন দেখার কেউ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রংপুর জেলার শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং একই সঙ্গে কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবার্হী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেন মজুমদারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এসব অভিযোগ নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এ নিয়ে কুড়িগ্রামের শিক্ষা প্রকৌশল  অধিপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তথ্য মতে, গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলিতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে ৬৭টি বিদ্যালয়ে ৩ কোটি ৫৫ লাখ ২ হাজার টাকার ফার্নিচার সরবরাহের কাজের টেন্ডার নোটিশ জারি করা হয়। যার টেন্ডার নোটিশ নং-০৫/ঊঊ/ঊঊউ/কত/ঘঋ (৩০০০ ঝপযড়ড়ষ) / ২০১৫-১৬, তারিখঃ ১২/১০/২০১৫ইং। দরপত্র দাখিলের তারিখ ছিল ০২/১১/২০১৫ইং এবং দরপত্র খোলার তারিখ ছিল ০৩/১১/২০১৫ইং দুপুর ৩টা। নিয়মানুযায়ী শিক্ষা প্রকৌশল কুড়িগ্রাম জোনে দরপত্র খোলার বিধান থাকলেও উক্ত নিবার্হী প্রকৌশলী তা না করে বিপুল অংকের উৎকোচের বিনিময়ে রংপুর শিক্ষা প্রকৌশল অফিসে বসে এই দরপত্র বাক্স খোলেন এবং তার মনোনীত ঠিকাদারদেরকে কাজ পাইয়ে দেন। শুধু তাই নয় জুন থেকে ডিসেম্বর/১৭ পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জোনের প্রায় ২০ কোটি টাকার ই-টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এর সবগুলো ই-টেন্ডারেই তিনি রংপুরে বসে মেইল হ্যাক করে টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার মনোনিত করেন। সে সাথে এ জোনের বিভিন্ন উপজেলার উন্নয়ন মুলক কোন কর্মকান্ডে তার কোন তদারকি নেই। এর ফলে তার নিয়োজিত ঠিকাদাররা যে যার মত সিডিউল বহির্ভৃত কাজ করে যাচ্ছেন। কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক আমান উল্লাহ ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৭.৫% উৎকোচ নিয়ে বিল পাঠান রংপুর অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান এর কাছে।  এখানেও দফারফা হওয়ারপর ফাইলে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে পৌঁছে নির্বাহী প্রকৌশলী’র টেবিলে। এরপরই ছাড় হয় ফাইল।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শাহী বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন জানান, আমার বিদ্যালয়ে ৪০টি সাইড ব্রেঞ্চ, টেবিল ৩টি, আলমীরা একটা, চেয়ার ৩টা সরবরাহ করার কথা ছিল। প্রায় দেড় মাস পুর্বে আংশিক মালামাল স্কুলে নিয়ে আসলে তা নি¤œ মানের ও দুর্বল হওয়ায় গ্রহন করিনি। এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ফার্নিচার স্কুলে দেয়া হয়নি। ফলে স্কুলে পাঠদান বিঘিœত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দেলওয়ার হোসেন মজুমদার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শাহী বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যে অনিয়ম হয়েছে তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করা হবে। আর কাজে তদারকি দুর্বলতার কথা স্বীকার করে বলেন, লোকবলের অভাবই এর প্রধান কারণ। রংপুরের দায়িত্বে থাকায় তিনি সবসময় কুড়িগ্রামে আসতে পারেন না। সেজন্য রংপুরে বসে ফাইল নিস্পত্তি করেন।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET