নয়া আলো ডেস্ক-
বাংলা নববর্ষ ১৪২৩ উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেইসাথে দেশের এই চরম সঙ্কটকালে ভাষা, সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্য সবে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি। বুধবার এক বাণীতে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ ১৪২৩, বাংলা নববর্ষের এই উৎসবমূখর দিনে আমি দেশ-বিদেশের সব বাংলাদেশীকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আবহমানকাল ধরে নতুন আঙ্গিক, রূপ, বর্ণ ও বৈচিত্র্য নিয়ে জাতির জীবনে বার বার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। অনন্তকাল ধরে গড়ে ওঠা আমাদের ভাষা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অহঙ্কার মিশে থাকে নতুন বছরের শুভাগমনে। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের হৃদয়ে উদ্ভাসিত হয় দেশমাতৃকার অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বিশালত্ত্ব, শাশ্বত প্রাচীনতা পবিত্র এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ, তাই পয়লা বৈশাখের এদিনে এক উদ্দীপ্ত প্রেরণায় জেগে উঠে দৈশিক চেতনা। প্রতিবছর নববর্ষ হিরন্ময় অতীতের আলোকে সম্মুখ পানে, অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে তাগিদ দেয়। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, নানা ঘটনা ও দূর্ঘটনার সাক্ষী ১৪২২ সালের চৌকাঠ ডিঙ্গিয়ে ১৪২৩ সালের প্রভাতে অজানা কাল-প্রাঙ্গণের সীমানায় আমরা উপস্থিত হয়েছি। গত বছরের দুঃখ, অবসাদ, ক্লান্তি, হতাশা ও গ্লানিকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা নিয়ে এসেছে বাংলা নববর্ষ। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ। বাংলা সন-তারিখ আমাদের প্রাত্যহিক জীবন ও দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অপরিহার্য অনুষঙ্গ, তাই এটি জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সূদীর্ঘকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির জমাট মোজাইককে ভেঙে ফেলার জন্য বিদেশী আধিপত্যবাদী প্রভুরা সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। স্বজাতির ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য চলছে নানা ফন্দি ফিকির। খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমানে দেশজুড়ে চলছে এক ভয়াবহ দুর্দিন। তাই দেশের এই চরম সঙ্কটকালে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার জন্য সব আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মানুষে মানুষে শুভেচ্ছাবোধ ও সহমর্মিতা গণতন্ত্রের সারবত্তা, নানা মত ও পথের বৈচিত্রে ভরা বহুমাত্রিকতা আমাদের সমাজ-সংস্কৃতির অন্তরাত্মা। সেই গণতন্ত্রকে রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে-একমাত্রিক ব্যবস্থা তৈরির অশুভ ইচ্ছায়। আমাদের আবারও চিরায়ত গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এ বছরের প্রথম দিনে আমি সকলের কল্যাণ কামনা করি। নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ। বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, সবার জীবন হয়ে উঠুক সমৃদ্ধময়। বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় হোক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। নববর্ষের এই নতুন সকালে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে সবার ব্যক্তিগত, পারিবারিক জীবন এবং জাতীয় পর্যায়ে সুখ ও শান্তি কামনা করি। অপর এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আজ ১৪২৩ বাংলা সনের প্রথম দিন। নববর্ষের প্রথম প্রভাতে আমাদের অগণিত সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাংলা নববর্ষ আমাদের জাতীয় জীবনের এক উজ্জল আনন্দময় উৎসব। নতুন বছর মানেই অতীতের সব ব্যর্থতা, জ্বরাজীর্ণতা পেছনে ফেলে নতুন উদ্দীপনা ও উৎসাহে সুন্দর সমৃদ্ধ আগামীর বিনির্মাণে এগিয়ে যাওয়া। জনগণের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা আবারো মানুষের দূর্ভোগ লাঘব করতে সক্ষম হবো এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এগিয়ে যাবো। ১৪২৩ বাংলা সনের প্রথম দিনের নতুন আলোতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট কায়মনোবাক্যে দেশের সব মানুষের সুখ ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।