নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি
খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার পর রাজশাহীতে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। দুপুরে নগরীর কামারুজ্জামান চত্বর থেকে মিছিল বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দের মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে সকালে নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে সমাবেশ করলেও তাতে রায় নিয়ে বক্তব্য রাখেন দলের নেতারা। এছাড়া সকাল থেকেই রাজশাহী মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার শাস্তির দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। রায় ঘোষণার পর আনন্দ মিছিল করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।তবে রায় ঘোষণার পর রাজশাহীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যদিও এ দিন রাজশাহীতে বিরাজ করে থমথমে অবস্থা। এ জন্য নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়ন করা হয় বিপুল সংখ্যক র্যাব ও পুলিশ। টহল দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরাও। এদিকে বিএনপি’র চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতি মামলার রায় ঘিরে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় দিনব্যাপি উপজেলা আ’লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপজেলা আ’লীগের দলীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্সে একত্রিত হয়। পরে সেখান থেকে খালেদা জিয়ার রায় ঘিরে বিএনপি-জামায়াত যাতে কোন প্রকার নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে আ’লীগ ও অংগ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী বৃন্দ। উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মতিউর রহমান টুকুর নেতৃত্বে নিউ মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, ভবানীগঞ্জ পৌর সভার মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দীন সুরুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন মাস্টার,সহ-প্রচার সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মজনু, চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আজাহারুল হক, আনোয়ার হোসেন, মকলেছুর রহমান দুলাল, উপজেলা আ’লীগের সদস্য আকবর আলী, হাচেন আলী, বকুল খরাদী জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি মহসিন আলী, গনিপুর আ’লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ, কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, শ্রীপুর ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইউসুফ আলী, গোবিন্দপাড়া আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ, মাড়িয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মতিন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আল-মামুন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামীম মীর, যুব মহিলা লীগের সভাপতি প্রভাষক শাহীনুর খাতুন,যোগিপাড়া যুবলীগের সভাপতি মাহাবুর রহমান মিঠু, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন সান্টু, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, ভবানীগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাদিরুজ্জামান মিলন, ছাত্রনেতা আতাউর রহমান, নাইম আদনান প্রমুখ। এসময় উপজেলা আ’লীগ ও অংগ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে যাতে কোন প্রকার নাশকতার সৃষ্টি না হয় সে জন্য ভবানীগঞ্জ সহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছিল। অন্যদিকে রায় উপলক্ষে নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে এমন সন্দেহে বুধবার রাতে ৫ জন বিএনপি’র দলীয় নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।#
বেগম খালেদা জিয়ার রায় শুনে রাজশাহীতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল সাধারন মানুষ
নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি
বহুল কাঙ্ক্ষিত জিয়া চ্যারিটেবুল ট্রাষ্ট মামলার রায় টিভিতে শুনে বিএনপির নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারন জনগন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। রাজশাহীতে অনেকে রায় শুনার পর চোখের পানি মুছতে মুছতে বাড়ীতে চলে যান। এদিকে গত বুধবার দিবাগত রাতে ছাত্রদল তানোর পৌরসভার সাধারন সম্পাদক মেহেদিকে আটক করে মেয়র মিজানসহ একাধিক ব্যক্তির নামে বিস্ফোরক মামলা দেবার কারনে আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন বলে একাধিক নেতারা নিশ্চিত করেন। ফলে কোথাও বিএনপির নেতাকর্মীদের দেখা মিলেনি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় গতকাল বৃহস্পতিবারসকাল ১০টার পর থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকসহ গ্রাম গঞ্জে সাধারন মানুষ টিভির সামনে বসে থাকেন। ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে বসে থাকেন রায় শুনার জন্য। এমন কোন দোকান ছিলনা যেখানে রায় শুনতে ভিড় জমা হয়েছিল না। রায়ের পরেই রাস্তা ঘাট শুন্য হয়ে পড়ে। সাধারন ভোটার সাইদুর জানান যদিও ক্ষমতাসীনদের কথায় বুঝাই যাচ্ছিল বেগম জিয়াকে কারাগারে নেয়া হবে। এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে টিভির সামনে বসে আছি। যখন রায় শুনলাম যে ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে খালেদা জিয়াকে। শুনেই মনে হল তাকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সরকার সব পরিকল্পনা করে রেখেছেন। তানোর ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন গত বুধবার রাত্রি আড়াইটার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় ককটেল সহ আটক করে আমাদের নামে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। ক্ষমতা কখনো চিরস্থায়ী না একদিন না একদিন পালা বদল হবেই। উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান বলেন,কোন ধরনের কর্মসূচী দেয়া হয়নি তারপরেও ঘুমন্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে ককটেলের নাটক সাজিয়ে আমিসহ আমাদের একাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দেয়া হয়েছে। যার কারনে তানোরের বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাড়ী ছাড়া হয়েছে। মহা আতঙ্ক নিয়ে নেতাকর্মীরা বাস করছেন । একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ২কোটি টাকা আত্মসাতের প্রহসনের মামলায় ৫ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। প্রহসনের দিন অবশ্যই একদিন শেষ হবে। ৯বছরে বিএনপির নেত্রীর উপর যে ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে দেশবাসী তা স্বচক্ষে দেখেছেন। আজ শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরা রায়ে মর্মাহত হয়েছেন তা নয় একই ভাবে গ্রামে পাড়া মহল্লায় সাধারন মানুষও চরমভাবে মর্মাহত হয়েছেন। কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা আসবে তা পালন করা হবে। কত নেতাকর্মীকে জেল দিবে দিক তাতে নেতাকর্মীদের মনোবল আরো শক্ত হবে। এখন হাজার হাজার নেতাকর্মীরা জেলে যেতে প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি। এদিকে রায়কে সামনে রেখে আতঙ্ক ছিলো সবার মাঝে। সম্ভাব্য এ পরস্থিতিতে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। ফলে রাজশাহী মহানগরীর ব্যস্ততম রাস্তাগুলো অনেকটাই ফাঁকা দেখা যাচ্ছে ছিল। তবে বেলা বাড়ার সাখে সাখে সাধারণ মানুষের ভীর লক্ষ করা গেছে। তার পরেও মানুষের মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে ছিল। সকাল থেকে মহানগরীর অধিকাংশ সড়ক অন্য দিনের তুলনায় ফাঁকা দেখা গেছে। এদিকে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় নগরীর মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। একই সঙ্গে বুধবার রাত থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দল ঘন ঘন টহল দেয় নগরীতে। নগরজুড়ে এমন আতঙ্কে সাধারণ মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তাঘাটে বের হয়নি। তবে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নাশকতা মোকাবেলায় রাস্তায় থাকার ঘোষণা দেওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে ছিলো