এম দুলাল আহাম্মেদ,গুইমারা থেকে:- খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার গুইমারা উপজেলার তৈকর্মা ছড়ায় অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকালে দুটি বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন এবং আনুমানিক ১হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেছেন গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পঙ্কজ বড়ুয়া।অবৈধভাবে তৈকর্মা ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত।
১০মে,বৃহস্পতিবার বিকেলে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও গুইমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়ার নেতৃতেব ভ্রাম্যমান আদালত সরকারি অনুমতি ছাড়া বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি ড্রেজার মেশিন এবং একস্তুপ বালি জব্দ করেন।পরে জব্দকৃত ড্রেজার মেশিন দুটি হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন এবং তাৎক্ষণিক নিলামে জব্দকৃত বালি এক লক্ষ টাকায় বিক্রি করে মূল্য সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য আদেশ দেন তিনি। এসময় গুইমারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজকুমার শীল, হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী, ইউপি সদস্য আরমানসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, ‘হাফছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়ক সংলগ্ন ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের ফলে ওই স্থানের ফসলী জমি এবং চলাচলের রাস্তা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বাস্তবতা দেখে দুঃখ পেয়েছি। এ ধরনের অভিযান গুইমারায় অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্পটে গিয়ে দেখা যায়,সরকারি অনুমতি বা দরপত্র ছাড়া, কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অন্যায় অবৈধভাবে প্রভাব বিস্তার করে গুইমারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আসছে কিছু অসাধু স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র।প্রভাবশালীদের ক্ষমতার দাপটে নিরীহ চাষীরা হারাচ্ছে তাদের ফসলী জমি ও টিলাভুমি।জানা যায় বিষয়টি স্থানীয় চাষীরা সিন্দুকছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রেদাক মারমাকে মৌখিকভাবে অভিযোগও করেছেন।
নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার ফসলী জমি ও হাফছড়ি-সিন্দুকছড়ি সড়ক সংলগ্ন ছড়া থেকে বালি উত্তোলনের ফলে ওই স্থানের ফসলি জমি ছাড়াও চলাচল রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে এবং পার্শ্ববর্তী টিলাগুলোকে দেখা দিয়েছে মারাত্মক পাহাড় ভাঙ্গন। প্রভাবশালী এ চক্রে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ও কিছু অসাধু ইউপি সদস্য জড়িত বলেন বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।শুধু তৈকর্মা নয় গুইমারা উপজেলার সাইংগুলিপাড়া, বাইল্যাছড়ি এলাকার বিভিন্ন স্পটে চলছে এভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন।বাইল্যাছড়ি এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে জাইকা নির্মিত দুইটি ব্রীজ।
কিছু কিছু সময় অসাধু চক্র ট্রাকে আইন-শৃংখলা বাহিনীর নাম সম্বলিত ষ্টীকার লাগিয়ে জনগনকে বোকা বানিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অপকর্ম।সম্প্রতি গুইমারা বাইল্যাছড়ি জোড়া ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ ভাবে খালের পাড় কেটে বালু বলে বিক্রি করার জন্য ব্যবহৃত ট্রাকে জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়ক নির্মান কাজে নিয়োজিত ২০ইবিজি নাম সম্বলিত ষ্টিকার ব্যবহার করলে তা প্রশাসনের নজরে আনা হলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা দৃশ্যমান হয়নি। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান,অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো কার কাছে? রক্ষক যেখানে ভক্ষকের ভুমিকায় অবতীর্ণ সেখানে কিছু করার নাই,শুরু দেখা যাওয়া ছাড়া।