গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট (বিআরআই) উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বারি আলু ৩৬, বারি আলু ৪০, বারি আলু ৪১, বারি আলু ৭২সহ ১০টি জাতের আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামের প্রতি হেক্টরে নতুন এ সব জাতের আলু ৪১.৮৭ টন উৎপাদিত হয়েছে বলে বিআরআই গোপালগঞ্জের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ জানিয়েছে। ওই বিভাগ আরো জানিয়েছে, এ বছরই প্রথম গোপালগঞ্জে ওই গ্রামের ৬ জন কৃষক ১০টি প্রদর্শনী প্লটে উচ্চ ফলনশীল ১০টি আলুর নতুন জাতের আবাদ করেন। এ আলু আবাদ করে তারা প্রচলিত আলুর তুলনায় প্রায় দেড়গুন বেশি ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছেন।
করপাড়া গ্রামের কৃষক লিপিকা বিশ্বাস, নূর হাসান, দুলাল সরকার, আশরাফুল মিনা, দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, নতুন জাতের আলুর বাম্পার ফলন পেয়ে অমরা খুশি। প্রচলিত আলু হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ টন উৎপাদিত হয়। কিন্তু নতুন জাতের আলু হেক্টরে প্রায় ৪২ টন ফলেছে। নতুন জাতের আলুতে রোগবালাই নেই বললেই চলে। তাই রোগ বালাই প্রতিরোধে অতিরিক্ত খরচ করতে হয়না। পক্ষান্তরে উৎপাদনও বেশী। এ সব কারণে এ জাতের আলু পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করে আমার প্রথম বছরই প্রচুর লাভের মুখ দেখেছি। আমাদের ক্ষেতের আলু দেখে অনেকেই আগামীতে এ আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
বিআরআই গোপালগঞ্জের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো: ওলিউর রহমান বলেন, প্রচলিত আলুর মতোই এ জাতের আলু আবাদ করা যায়। তুলনা মুলক ভাবে আবাদ খরচ কম। আবাদের পর যতœ নিলেই আলুর বাম্পার ফলন পাওয়া যায়। নতুন ১০টি জাতের আলু খেতে সুস্বাদু। এ কারণে বাজারে এ আলুর চাহিদাও বেশি থাকবে।
বিআরআই গোপালগঞ্জের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এইচ.এম খায়রুল বাসার বলেন, এ জেলায় কৃষক পর্যায়ে উচ্চ ফলনশীল আলুর ১০টি নতুন জাতের উপযোগিতা যাচাই করেছি। এতে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। এ জেলার কৃষক নতুন এ সব জাতের আলুর আবাদ করে লাভবান হয়েছে। এ জেলার জন্য উপযোগী আলুর জাত নির্বাচন করে উৎপাদন বৃদ্ধি করতেই আমরা সরেজমিন গবেষণার কাজ করে যাচ্ছি।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক সমীর কুমার গোস্বামী বলেন, নতুন জাতের আলুর উৎপাদন ক্ষমতা অনেকে বেশি। এ আলু চাষ করে কৃষক যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে এ আলুর চাষ সম্প্রসারিত হলে জাতীয় ভাবে আমাদের আলুর উৎপাদন আরো বাড়বে। এটি কৃষক ও কৃষির জন্য একটি সু সংবাদ।