

গতকাল সরজমিনে পরিদর্শণ কালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় অধিবাসিদের সাথে আলাপ করে জানা যায় মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এবং ড্রেজার দ্বারা অপরিকল্পীত বালু উত্তোলনের ফলে এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে এবং ভাঙ্গনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রামের একটি বড় অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন সময়ে গ্রামের উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্যগ্রামে বাজারগুলো নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে এখন কোন এগুলোর অস্থিত নেই। চরলাপাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঈদগাহ মাঠ ও ধানের জমি নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গনের শিকার।
স্থানীয় অধিবাসি হাজী আ: রহিম জানান জরুরী ভিত্তিতে সুরক্ষাবাদ নির্মাণ করা না হলে আগামী কয়েক বছরে গ্রামের অস্থিত পাওয়া যাবে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান ও ইকবাল মিয়া বলেন পার্শ¦বর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর গ্রামের সাথে আমাদের গ্রামের সীমানা বিরোধ রয়েছে। সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির আগেই রায়পুরা উপজেলাস্থ মির্জাচর মৌজার মির্জাচর বালু মহালটি ইজারা দেওয়া হয়। উক্ত বালু মহালের অধিকাংশ জায়গা নবীনগর উপজেলার অর্ন্তগত। সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি না করে বালু মহাল ইজারা না দেওয়ার জন্য এবং বালু মহালের তফসিল ভুক্ত নির্ধারিত সীমানার মধ্যে বালু উত্তোলন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রায়পুরা উপজেলা প্রশাসন কে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা সেই অনুরোধ না মেনে নবীনগর সীমানায় বালু উত্তোলন করার ফলে চরলাপাং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
ইতোপূর্বে অবৈধ বালু উত্তোলন করার কারণে নবীনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) একটি ড্রেজার আটক করেন ও অর্থ দন্ড প্রদান করেন। বিরোধীয় স্থান থেকে বালু উত্তোলন না করার মুছলেখা দিলেও পরবর্তীতে আবারও একইস্থান থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারিগরি কমিটিতে স্থানীয় প্রশাসন কে কোঅপক্ট করার দাবি করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান জেলা প্রশাসক মহোদয় এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন চরলাপাংয়ে নদী ভাঙ্গন রোধ কারার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে সরজমিন পরিদর্শণ করে প্রকেল্পর সম্ভাবতা যাচাই, প্রাক্কলন ও সুপারিশমালা প্রনয়নের জন্য কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটি যাতে জরুরী ভিত্তিতে সমীক্ষা শেষ করে কাজ শুরু করেন সে জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কে অনুরোধ জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় দুই এলাকার অমিমাংসিত সীমানা চিহৃত করনের ব্যবস্থা করার জন্য গত বছরের শেষ দিকে ভূমি রেকর্ড ও জরীপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরারব পত্র দিয়েছেন। তাই আশা করা যায় সীমানা সমস্যার ও সমাধান হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল্লাহ বলেন নদী শাসন অত্যন্ত কঠিন কাজ। ড্রেজার দিয়ে অপরিকল্পীত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী গতি প্রবাহে বিঘœতার সৃষ্টি হয়। তিনি আরো বলেন মাননীয় সংসদ সদস্য বীরগাঁও, নবীনগর পশ্চিম ও শ্যামগ্রাম এলাকায় নদী সুরক্ষাবাধ নির্মাণের জন্য মাননীয় মন্ত্রী বরারব ডিও লেটার দিয়েছেন। তার ডিও লেটারের ভিত্তিতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশে ইতোমধ্যে কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে উক্ত কমিটি দ্রুত সরজমিন পরিদর্শণ করে সমীক্ষা, প্রাক্কলন ও সুপারিশমালা প্রস্তুত করে কারিগরি প্রতিবেদন প্রেরন করবে। এবং নদী সুরক্ষাবাধ নির্মাণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
Please follow and like us: