কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ইটভাটায় নারী ও পুরুষ শ্রমিকের মারামারি এবং অশালীন গালাগালের অপমান সহ্য করতে না পেরে পলি আক্তার(১৮) নামে এক নারী শ্রমিক আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় প্ররোচনার অভিযোগে পুলিশ ওই ইটভাটার গোলাপ মিয়া নামে এক অপর এক শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। মৃত পলি সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মফিজ আলীর মেয়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা। পলি আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত গোলাপ মিয়া একই উপজেলার মৌউজ আলীর ছেলে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের আমানগন্ডা একতা ব্রিকস্ ফিল্ডে কাজ চলাকালীন নারী শ্রমিক পলি আক্তারের পরিবারের সাথে গোলাপ মিয়ার বাকবিতন্ডাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়। বাবাকে মারতে দেখে পলি গোলাপ মিয়াকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে গোলাপ মিয়া পলি আক্তারকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে এবং ডান হাতের একটি আঙুল কামড়ে জখম করে। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে পলি আক্তার কিছুক্ষণ পরে ব্রিকস্ ফিল্ডের পাশে অবস্থিত ঘরের ভিতর গিয়ে গলায় ওড়না পেছিয়ে ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। এ সময় আশ-পাশের অন্য শ্রমিকরা দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পলি আক্তারের বাবা মফিজ আলী বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় ইটভাটায় কাজ করার সময় আমার মেয়েকে অভিযুক্ত গোলাপ মিয়া বিনা কারণে মারধর করে এবং কামড়ে একটি আঙুল জখম করে। পলি আক্তার এমন অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে’।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘পলি আক্তারকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। তার ডান হাতের আঙুলে একটি জখমের চিহ্ন রয়েছে’।
বৃহস্পতিবার চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা বলেন, ‘নারী ও পুরুষ শ্রমিকের মারামারি এবং অশালীন ভাষায় গালমন্দের জের ধরে অপমান সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়না পেছিয়ে পলি আক্তার আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পলির বাবা মফিজ আলী বাদি হয়ে থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা দায়ের করলে পুলিশ প্ররোচনাকারী গোলাপ মিয়াকে গ্রেফতার করেছে’।