রবিবার (২৭ জুন) ছাগলনাইয়ায় পৃথক স্থানে দুই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মাঝে একজন উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের পশ্চিম দেবপুর হাজী আবদুল আজিজ বাড়ীর মৃত নুরুল হকের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩৯) এবং অন্যজন পৌরসভার উত্তর মটুয়া ওয়ালী ভুইয়া বাড়ীর মৃত জালাল আহমেদের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৬)।
প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, মহামায়া ইউনিয়নের পশ্চিম দেবপুরে জাহাঙ্গীর আলম তার বসত ঘরে সে একা থাকেন। বিগত ৬ বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধন বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকে সে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিল। দাম্পত্য জীবনে সে এক কন্যা সন্তানের জনক। মেয়েসহ জাহাঙ্গীরের পরিবারের সকল সসদ্য চট্টগ্রামে বসবাস করে। স্থানীয়রা জানান, জাহাঙ্গীর একজন মাদকসেবি তবে শান্ত মেজাজের অধিকারী। জাহাঙ্গীরের পাশের ঘরের জেঠি মা শরীফা বেগম জানান, সে ঘরে একা থাকে। আমি প্রায় তাকে খাবার খেতে দিই। গতকাল রবিবার সকাল ১১ টায় আমি তাকে একটি পাকা আম দিতে ঘরে প্রবেশ করে দেখি সে ঘরের ভুতুরের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। তাত্ক্ষণিক শোরচিৎকার করলে বাড়ীর লোকজন এগিয়ে আসে। জাহাঙ্গীরের জেঠা আবদুর রাজ্জাক জানান, ঝুলন্ত লাশ দেখে আমরা ছাগলনাইয়া থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ বেলা ১ ঘটিকার সময় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, মটুয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রী সাইফুল ইসলাম তার শ্বশুর বাড়ী উপজেলার পাঠাননগর ইউনিয়নের উত্তর হরিপুর দুলাগাজী মজুমদার বাড়ীতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়েছে বলে জানাগেছে। নিহতের শালিকা তফুরা আক্তার জানান, তার বোন ফারজানা আক্তার ঝর্ণার সাথে নয় বছর আগে সাইফুল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সাইফুল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ও মাদকসেবী। রবিবার ভোর ৫ টায় সাইফুলের স্ত্রী ফারজানা আক্তার ফজরের নামাজ পড়তে ঘুম থেকে জাগে। পরে ফারজানা সকালের নাস্তা তৈরীতে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় সাইফুল শোয়ার কক্ষের দরজা বন্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে সে সাথে থাকা তার ছেলে শরীফুল ইসলামকে (৭) শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যার চেষ্টা করে। পরে বাড়ীর লোকজন দরজা খুলতে বললে সাইফুল দরজা খুলে ছেলেকে রুম থেকে বের করে পুনরায় দরজা বন্ধ করে দেয়। সকাল ১০ পর্যন্ত দরজা খুলতে বললেও সে খুলেনি। সাইফুলের আওয়াজ শুনতে না পেয়ে ঘরের থাই গ্লাস খুললে দেখাযায় সে ঝুলছে। পরে সাইফুলের পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে সকাল ১১ টায় তারা লাশ উদ্ধার করে ফেনী সদর হাতপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
দুই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের বিষয়ে ছাগলনাইয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, পশ্চিম দেবপুরের জাহাঙ্গীরের লাশ উদ্ধার করে আমরা জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। তার জিহবা দাঁত দ্বারা কামড়ানো এবং পুরুষাঙ্গে বীর্য দৃশ্যমান হওয়াতে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছি এটি আত্মহত্যা। অন্যদিকে, উত্তর হরিপুরের ঝুলন্ত লাশ সাইফুলের বিষয়ে ওসি জানান, তার লাশ স্বজনরা মর্গে নিয়েগেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারন নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও জানান ওসি শহিদুল ইসলাম। এদিকে ছাগলনাইয়ায় একই দিন দুই ব্যক্তির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
Please follow and like us: