ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় জনপ্রিয় হচ্ছে বিদেশি ফুল জারবেরা। এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ফুলটি। ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের ছোট ঘিঘাটির মাঠে এটির চাষ হচ্ছে। বিদেশি জাতের এ ফুল লাল, সাদা, হলুদ ও গোলাপিসহ ৮টি বাহারি রঙের হয়ে থাকে। ফুলটি ক্ষেত থেকে তোলার পরও ১০ থেকে ১৫ দিন তাজা থাকে। যে কারণে বাজারে এ ফুলের চাহিদা বেশ।
২০১৭ সালের জুনে প্রায় তিন বিঘা জমিতে প্রথম জারবেরা ফুলের বীজ রোপণ করেন ত্রিলোচনপুরের ফুলচাষী টিপু সুলতান ও নুর মোহাম্মদ। বীজ আনা হয় পার্শ^বর্তী দেশ ভারত থেকে। যৌথভাবে প্রায় তিন বিঘা জমিতে এ ফুলের চাষ করেছেন। ফুল ক্ষেতের উপর ছাউনি দিতে একই দেশ থেকে আমদানি করা হয় বিশেষ ধরনের পলিথিন, যা তৈরি হয় ইউরোপের দেশগুলোতে। রোপণের তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। একটি গাছ একাধারে দুই থেকে তিন বছর ফুল দেয়। এ সময়ে একটি গাছে ২০ থেকে ২৫টি ফুল পাওয়া যায়। কৃষিবিদ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জারবেরা ফুল চাষের জন্য এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। শীত মৌসুমে উৎপাদন বেশি হয়। এছাড়া দেশের বাজারে এ ফুলের দাম ও চাহিদা বেশি। তবে এ ফুল লাভজনক হলেও খরচ বেশি হওয়ায় চাষ করতে পারছেন না সাধারণ কৃষকরা। ফুলচাষী টিপু সুলতান জানান, গত বছর রোজার মাসে পার্শ^বর্তী দেশ ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৯৬ শতক জমিতে রোপণ করি। এরপর তিন মাস পর গাছে ফুল আসতে শুরু করে। বীজ রোপণ, ক্ষেতের চারপাশে বাঁশের বেড়া স্থাপন, উপরে ছাউনি, সার, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ ফুল পরিচর্যা করার জন্য চারজন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন।
তিনি আরও জানান, গত ছয় মাসে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ফুল বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১২শ’ ফুল সংগ্রহ করা যাচ্ছে। একটি ফুল ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এ ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, জার্মান পরিবেশবিদ ডাক্তার ট্রগোট জারবেরের নামানুসারে ফুলটির নামকরণ করা হয়।