শামীম খান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধঃ- আকাশ সংস্কৃতির দৌরাত্মে অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রেখে গ্রামবাংলার মানুষকে খানিকটা আনন্দ দিতে ঝিনাইদহের বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। অনেকদিন পর গ্রামীণ জীবনে একটু বিনোদনের আশায় সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজির হন হাজার হাজার গ্রামবাসী। সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, অবুঝ গরুগুলো যে কোনো মূহূর্তে উঠে যেতে পারে যে কারো গায়ের ওপর। তবুও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, কেউ দূর থেকে এ প্রতিযোগিতা দেখতে চান না। কাছে থেকে প্রতিযোগিতা দেখার মধ্যে আরেক প্রতিযোগিতার অবতরণ হয় সেখানে। এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে রীতিমতো মেলা বসে বেতাই গ্রামের মাঠে। সেখানে ছিল নাগরদোলাসহ বেশ কিছু আয়োজন। দোকানীরাও রকমারি পণ্য সাজিয়ে বসেন। এক দিনের জমজমাট এক মেলা বসে।
বেতাই গ্রামের মাসুদ রানা বলেন, খেলা মানেই শুধু ক্রিকেট কিংবা ফুটবল নয়। আটষট্টি হাজার গ্রাম অধ্যুষিত বাংলায় কৃষি বাহন গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতাও হতে পারে একটি বিরাট খেলা। আর সেখানে সেই খেলা দেখতে উপস্থিত হবে হাজার হাজার দর্শক এমন বাস্তবতায় ধন্য ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের বেতাই গ্রামের মানুষ। প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, গান্না ইউনিয়ন এক সময় সন্ত্রাসী কর্মকা-ের কারণে পরিচিত ছিল। এখানকার মানুষ সবসময় আতংকে দিন কাটাতেন। সেসব অরাজকতা থেকে বেরিয়ে আসতে এই ধরনের আয়োজন। আয়োজক রান্নু বিশ^াস জানান, এই গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে গ্রামের মাঠে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। ঝিনাইদহ, যশোর ও মাগুরা জেলার ০৮টি গরুর গাড়ি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বেতাই গ্রামের মাঠে নারী-পুরুষ মিলিয়ে হাজার হাজার দর্শকের সমাগম ঘটেছে। তুমুল প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ এ প্রতিযোগিতায় সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হন বেতাই গ্রামের প্রথম স্থান অধিকার করেন রাহুজ্জেল হোসেন, দ্বীতিয় স্থান অধিকার করেন ডালিম কুমার ও তৃতীয় হন গোলাম রসুল। পুরষ্কার হিসেবে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ২১ ইঞ্চি ও ১৪ ইঞ্চি রঙ্গিন টেলিভিশন।