ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল এলাকায় স্থায়ীভাবে নেই কর্তব্যরত কোন পুলিশ সার্জেন্ট এমন কি অনিয়মিতভাবে ট্রাফিক পুলিশ এর দায়িত্ব কর্তব্য পালন চলছে ঢিলেঢালা ভাবেই। অথচ ঝিনাইদহ জেলার আশপাশের জেলার পরিবহনের সংযোগ কেন্দ্র স্থানের নাম ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল। প্রতিদিন ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ-মাগুরা, ঝিনাইদহ- যশোর এমন পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের জন্য এটি মূল শহরের প্রবেশপথ হিসাবে চার রাস্তা দিয়ে হাজারো গণপরিবহন সহ নানা প্রকার যান চলাচল করছে সবসময়। কিন্তু সাধারন জনগনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানে একজন ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কেও খুঁজে পাওয়া যায়না অধিকাংশ সময় । প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সানাউল হক এভাবেই যেন অভিযোগ এর সুরে কথা গুলো বলছিলেন।
সরেজমীনে টার্মিনাল এর চতুর্দিকে একাধিক দিন পর্যবেক্ষন করে প্রায় সময়ই মেলেনি কোন ট্রাফিক পুলিশ বা ট্রাফিক সার্জেন্ট! কখনো বা ট্রাফিক পুলিশ কে খুজে পাওয়া গেলেও পাশেই অবস্থিত মার্কেট এর দোকানে পান খেয়ে গল্প করতে বা বসে থাকতে দেখা যায় বলে স্থানীয়রা জানান।
এই পথ দিয়ে নানা জেলার মানুষ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পেশাগত,ব্যাবসা সংক্রান্ত বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর গন্তব্যপথ হওয়ার কারনে যাতায়াত করছেন দিন কি রাতে, প্রতিদিন হাজারো যাত্রী অফিস করতে সকাল সন্ধ্যা যাতায়াত করছেন ব্যাক্তিগত পরিবহন মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে বাস, তিনচাকার যান এ চড়ে এবং ভারত সীমান্ত দিয়ে মালবাহী ট্রাক এর ও প্রচুর চলাচল রয়েছে সর্বক্ষণ। এছাড়াও শহরের প্রবেশ পথ হওয়ার কারনে গোপালপুর,গোয়ালপাড়া মধুপুর থেকে সব সময় স্কুলের শিশু / অভিভাবক কখনো সাইকেল চালিয়ে কখনো বা ত্রিচক্রযান এ চড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া আসা করছে। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা জানাতে এই পথে নিয়মিত চলাচল করা কলেজ ছাত্র আবির হোসেন (১৮) বলেন, যশোর -ঝিনাইদহ বাইপাস সড়ক দিয়ে আসা বাস বা ট্রাক চালকরা প্রায় সময় ট্রাফিক আইন লংঘন করে ভুল পথে বাঁক নিচ্ছেন ফলে যে কোন দিনই ঘটে যেতে পারে মুখোমুখি সংঘর্ষ বা বড় কোন সড়ক দুর্ঘটনা। এই বিষয়ে স্থানীয় দোকানদার ও বাস-ট্রাক পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরাও এভাবে ভুল পথে মোড় ঘোরানোর ব্যাপারটি প্রায়শই হয় বলে জানিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টায় যশোর থেকে আসা এক যাত্রী গড়াই পরিবহন থেকে মাত্র ঝিনাইদহ টার্মিনালে নেমে পড়লেন এমন সময় ( পাভেল মোল্লা,বাড়ী গোবিন্দপুর) তাকে ট্রাফিক পুলিশ যাতায়াত কালে ট্রাফিক এর উপস্থিতি কেমন দেখতে পান এই প্রশ্নে তিনি জানান , শহরের ভিতর এত ভীড় জ্যামের ভিতর ও একই জায়গায় ২/৩ জন পুলিশ সার্জেন্ট দেখতে পাওয়া যায়! কিন্তু এখানে সন্ধ্যা, রাত তো দূরে থাক সকালে অফিসে যাবার সময় এমনকি কোন দিন দিনের বেলাতেও তাদেরকে সেইভাবে দেখা যায়না!
এই প্রেক্ষিতে চার সড়কের সংযোগ মোড় হিসাবে ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত না থাকার ব্যাপারে ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ সরকার এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বর্তমানে ঝিনাইদহ ট্রাফিকে জনবল কম থাকায় ও প্রায় প্রতিবেশী জেলার ভি,ভি,আই,পি ডিউটির কারনে এ রকম সংকট চলছে। তবে বিভিন্ন সময় জেলা ট্রাফিক এর একাধিক এ,টি,এস,আই ও সার্জেন্ট পুলিশ নিয়মিত টহল দিয়ে থাকেন। তবে এই সমস্যা থেকে জনগন কবে নাগাদ প্রতিকার পাবেন সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন সময় জানাতে পারেননি ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি