নয়া আলো-
ঢাকার মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে রিমান্ডে থাকা দৈনিক আমার দেশ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তার উদ্বিগ্ন মা অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগম এবং আইনজীবী ও সাংবাদিক নেতারা। কিন্তু পুলিশ তাদের দেখা করতে দেয়নি। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ডিবি অফিসের গেটে কর্তব্যরত পুলিশ জানায় যে, আজ দেখা করা সম্ভব নয়। ফলে বেশ কিছুক্ষন ডিবি অফিসের সামনে সবাইকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগম।
সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান তিনি ডিবি অফিসে কেন এসেছেন? অধ্যাপিকা মাহমুদা বেগম বলেন, আমার ছেলে মাহমুদুর রহমান নির্দোষ। তার নামে যে মামলাটি দেয়া হয়েছে সেটি একটি মিথ্যা মামলা। যে অভিযোগে মামলাটি হয়েছে এর সঙ্গে আমার ছেলে বিন্দুমাত্র জড়িত নয়। তবুও তাকে রিমান্ডে আনা হয়েছে। এজন্যে এই বৃদ্ধ বয়সে আমি উদ্বিগ্ন এবং নানা শঙ্কায় ভুগছি। তাছাড়া আমার ছেলের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার ওজন ১০কেজি কমে গেছে। তার স্বাস্থ্য নিয়ে আমি চিন্তিত। আমি আশা করি রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে যেন কোন অসৌজন্য মূলক আচরণ করা না হয়। তিনি আরও বলেন, আজ সাত বছর ধরে আমরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। সব মামলায় উচ্চ আদালতে জামিন হলেও আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। এ অবস্থার অবসান চাই, আমার ছেলের মুক্তি চাই। তিনি পুলিশকে ছেলের জন্য আনা কিছু খাবার পৌছে দেয়ার অনুরোধ করলে পুলিশ প্রথমে অপারগতা প্রকাশ করে পরে তা পুনরায় গ্রহণ করে। বাদাম, রুটি, কলা ও পানি পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মাহমুদুর রহমানের আইনজীবী ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে তার মাকে সাক্ষাৎ করতে না দেয়ায় আমরা দুঃখ পেয়েছি। তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
অ্যাডভোকেট মাসুদ বলেন, মাহমুদুর রহমানকে ডিবি পুলিশ আজ ১২ টায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনেছে। সম্পূর্ন মিথ্যা একটি মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে এবং সেই মামলায় তাকে রিমান্ডে আনা হয়।
তিনি বলেন, একজন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিল যে, তাকে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে আর তার উপর ভিত্তি করে মামলা দায়ের ও রিমান্ড ইত্যাদির কোন আইনগত ভিত্তি নেই। আমেরিকার আদালতেও অপহরণের এ গল্প খারিজ হয়ে গেছে। মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে এই মামলার কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। এফআইআর এ তার কোন উল্লেখ নেই, আমেরিকার আদালতের আদেশে মাহমুদুর রহমানের কোন প্রসঙ্গ নেই এমনকি যিনি অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তার কোন স্ট্যাটাসেও মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। এ ধরনের মিথ্যা মামলায় তাকে জড়ানোর জন্য জেলে আটক রাখারও কোনো কারণ নেই। তাছাড়া ২০০৬ সালে সরকারী দায়িত্ব ছাড়ার পর এখন পর্যন্ত মাহমুদুর রহমান আমেরিকাও যাননি।
মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত সেদিন তার আদেশে উল্লেখ করেছিলেন যে, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে যেন সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়। আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশনা অনুসরণ করে মাহমুদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
এ সময় আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ, আমার দেশ এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইঞ্জিনিয়ার চুন্নু সহ বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।