আগামীকাল রবিবার সকালেই কাঙ্খিত ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এবার কী নতুন কেউ, না বর্তমান চেয়ারম্যানই বহাল হবেন, এ নিয়েই ১৪টি ইউনিয়নের ভোটার-সহ সাধারণ মানুষের মুখে-মুখে আলোচনা-জরিপের যেন শেষ নেই। তবে ঘুর্ণিঝড় রেমাল’র কারণে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন স্থাগিত হওয়ায় পর অঘোষিত ভাবে বিএনপি-জামায়াত ব্যাপক ভাবে মাঠে নামায় ঘোড়ার সঙ্গে আনারসের প্রতিদ্বন্দিতা তীব্রতর হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বৃহত্তর ডুমুরিয়া উপজেলায় ১০৮টি ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৩ হাজার ১১৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ- ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৭, মহিলা- ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৭ জন।
৯ জুন রবিবার অনুষ্ঠিতব্য ভোটে সকল পদের প্রার্থীই নিজেকে স্বতন্ত্র(নির্দলীয়) বললেও সকলেরই রাজনৈতিক পরিচয় বা ব্যাক-গ্রাউন্ড রয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে ‘ঘোড়া’ প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী এজাজা আহমেদ, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী আবদুল হাদী’র ছেলে। অপর দিকে আনারস প্রতীক নিয়ে তরুণ এ্যাড. মোমিনুর রহমান (নয়ন) ডুমুরিয়ায় বিএনপির অন্যতম গোড়াপত্তনকারী ও ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপি নেতা মোল্লা আবুল কাশেম’র একমাত্র ছেলে। তাছাড়া ডুমুরিয়ায় প্রভাবশালী মোল্লা পরিবারের সদস্য, উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মোল্লা মোশাররফ হোসেন মফিজ তার চাচা। আর খুলনাঞ্চলে বিশিষ্ট ভূমি ব্যবসায়ী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজগর বিশ্বাস তারা মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘোড়া প্রতীকের এজাজ আহমেদ আওয়ামী লীগের অঘোষিত প্রার্থী।
আপরদিকে রাজনৈতিকভাবে বিএনপি-জামায়াত এ ভোট বয়কট করলেও ডুমুরিয়ায় তার ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। ভেতরে-ভেতরে বিএনপি জামায়াতের নেতা-কর্মীরা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে টিম গঠন করে ‘আনারস’ প্রতীক নিয়ে এ্যাড. মোমিনুর রহমান (নয়ন)’র পক্ষে নির্বাচন করছেন। তাদের মহিলা কর্মীরাও বিশেষত মুসলিম এলাকায় বাড়িতে-বাড়িতে যেয়ে মহিলাদের বিশেষ আবেগ ছড়াচ্ছেন। এখানে উল্লেখ্য ভোট গ্রহনের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় বিএনপি-জামায়াত’র বড়-বড় নেতারা সিটিং করে তাদের নেতা-কর্মীদের ‘আনারস’র পক্ষে মাঠে নামিয়েছেন।
অপর প্রার্থী খুলনাঞ্চলে বিশিষ্ট ভূমি ব্যবসায়ী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজগর বিশ্বাস তারা, মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ হলেও তিনি মসজিদ-মন্দির, ওয়াজ মাহফিল, নামযজ্ঞ বা পূজার অনুষ্টানে যোগদিয়ে আর্থিক অনুদান দিয়ে একটা সাড়া ফেলেছেন। বিগত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থীর বিরোধীতাকারী কিছু মানুষও তার পক্ষে দাঁয়িড়েছেন। তবে মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রচারণা উল্লেখযোগ্য।
ডুসুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর বিজয়ের বিষয়ে নিশ্চিত। তবে সর্বস্তরের অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় ১০ দিনের বাড়তি প্রচার সময়ের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত যৌথ প্রচেষ্টায় তাদের প্রার্থীর অবস্থানে উন্নয়ন ঘটিয়েছে। বর্তমানে মাঠের নানান হিসাব দেখে-শুনে মনে হচ্ছে। ৯ জুন রবিবার ঘোড়া’র সঙ্গে আনারস’র প্রতিদ্বন্দিতা হতে চলেছে।
Please follow and like us: