চড়ক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব পূজা। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে বা চৈত্রের শেষ দিনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পূজার উৎসব চলে।
এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অংশ।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে অভিহিত। চড়ক পূজায় বিশেষ বৈশিষ্ট্য খুব ভোরে শ্মশান হতে একজন সাধক সণ্যাসির নেতৃত্বে ৬-৭ জন ভক্ত শরীরে রং লাগিয়ে হাজরা সেজে ঢোলক ও বাঁশির তালে গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমুহে নৃত্য প্রদক্ষিন করেন। পরবর্তীতে ভক্তের পিঠে লোহার হূক (বরশি) লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। হুক লাগানো অবস্থায় ঘুরতে থাকে ভক্ত। ঘোরা শেষ হলে রক্ত বা কাটা চিহ্ন মিলিয়ে যায়। তাড়াশে হাজরা গারি নামক একটি পুকুর আছে কথিত আছে অনেক পূর্বে হাজরা নৃত্য করতে করতে এই পুকুরে ডুব দিয়ে আর উঠেনি। এই বিশেষ দিনে চড়কপূজা অনুষ্ঠিত হলেও এর প্রস্তুতি চলে টানা সপ্তাহ ব্যাপী বা পনের দিন অবধি। এর পরদিন শিব পার্বতীর পালা গেয়ে, মুখা নাচানো, কৃষ্ণ সাজিয়ে আয়োজকরা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়। আর চাল-ডাল, টাকা-পয়সা, মাগন (ভিক্ষা) তুলে পূজার খরচ জোগাড় করে। চড়ক পূজাকে ঘিরে এই উৎসব উপভোগে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অগণিত শিশু ও নারী পুরুষের সমাগম ঘটে।
Please follow and like us: