নয়া আলো-
মাথার উপরে তেজদীপ্ত সূর্য। যেন আগুন ঝরছে। পায়ের নিচে পিচঢালা পথ তাপ বাড়িয়েছে শতগুণে। বাতাস নেই বললেই চলে। যে টুকু আছে তা যেন প্রশান্তির বদলে গায়ে আগুনের হল্কা হয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিহীন বোশেখী আকাশ। এতেই নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে জনজীবন।
শনিবার রাজশাহীতে মৌসুম সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে ঠেকেছে। আর দিনের সর্বনি¤œ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২০ এপ্রিল থেকেই দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। বেড়েছে সর্বন্মি তাপমাত্রাও।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, গেল দিন কয়েক ধরে রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছিলো মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়ে তা রুপ নিয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এর আগে ১৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কমে ৩৪ দশমিক ৮ এ নেমেছিলো। এর পরদিন থেকেই আবারো বাড়তি। এমনিতেই বৃষ্টিপাত কম। তার উপর এ মাসে আর বৃষ্টির সুখবর মিলছেনা না বলে জানিয়েছেন রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম। ফলে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, এমনিতে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এমনই মুহূর্তে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই ভারী বৃষ্টিপাত না হলে এ পরিস্থিতির উন্নতি হবার কোন সম্ভাবনা নেই।
এদিকে, অব্যহত তাপপ্রবাহের ফলে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা যেন দুর্বিষহ দিন অতিবাহিত করছে। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও হাঁস-ফাঁস করছে। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে মাটি ফেটে চৌঁচির হয়ে যাচ্ছে। এর উপর সকাল থেকে নগরীর অধিকাংশ এলাকাই থাকছে লোডশেডিংয়ের কবলে। বিদ্যুৎ বিভাগের ভাষ্য, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। ফলে বাধ্য হয়েই লোডশেডিংয়ে যাচ্ছেন তারা।
তীব্র তাপপ্রবাহে দুপুর গড়াতেই রাস্তা-ঘাট জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে। আগুনমুখো আবহাওয়ার কারণে রাস্তাঘাটে কমছে মানুষের চলাচল। কর্মজীবী মানুষ ছাড়া কেউই খুব জরুরী কাজ না থাকলে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। যারপরনাই ভোগান্তিতে থাকা মানুষের মধ্যে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে।
গত কয়েক দিন থেকে হঠাৎ করে তাপমাত্রা বাড়ায় ঘরে ঘরে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশি সহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এসব রোগে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের দুর্ভোগ বেড়েছে এ তীব্র গরমে।