
ইমরান খান রাজ (দোহার-ঢাকা),
ঢাকার দোহার উপজেলায় এক অভিনব কৌশলে ঘুষ বাণিজ্য করতে গিয়ে জনগনের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়লেন থানা এএসআই রফিকুল ইসলাম। এলাকাবাসী জানান, মারুক নামের এক যুবককে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানিয়ে বড় অঙ্কের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেন এএসআই রফিক। একাজে তাকে সহযোগিতা করে পুলিশের সোর্স মধুরচর গ্রামের মো: রাজীব ও দোহার গ্রামের নূর মোহাম্মদ ওরফে মহত। পরিকল্পনা করা হয়, ইয়াবা দিয়ে মারুফকে আটক করে আদায়কৃত টাকা তিনজন ভাগ করে নেবেন। জানা যায়, পারিবারিক কাজে মারুফ রাত ৮ টার দিকে দোহার বাজারে আসছিলেন। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মারুফের হাতে ৬০০ টাকা ধরিয়ে দিতে যান মহত। প্লানিং অনুযায়ী এএসআই রফিক ও রাজীব সেখানে যান। এএসআই টাকার বিষয়ে মহতকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, এ টাকা ইয়াবা কেনার জন্য মারুফকে দিয়েছি। এরপর মারুফ ও মহতকে আটক করে একটি অটোরিকশা করে থানার দিকে নিয়ে যান রফিক। পথে মহতকে ছেড়ে দেন। খবর পেয়ে মারুফের মা ফাতেমা বেগম রাতেই এএসআই রফিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মারুফের মুক্তির জন্য তার মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন এএসআই রফিক। পরে ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে মুক্তি পায় মারুফ। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঐ পুলিশ সদস্যের অপসারণ ও শাস্তির দাবি করে মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে যান। একপর্যায়ে দোহার থানা ওসি সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। নূর মোহম্মদ ওরফে মহত বলেন, এএসআই রফিক আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এ কাজে বাধ্য করেছেন। পুলিশের সোর্স রাজীব রফিককে সহযোগিতা করছেন। তারা দুজন আমাকে ৬০০ টাকা দিয়ে মারুফকে ফাঁসানোর জন্য আমাকে ব্যবহার করে।এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। এলাকার নিরীহ ছেলেদের ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে প্রশাসনের নাকে ডগায়। এমন ঘটনা দোহারে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। এবং এসকল ঘটনার সাথে উপরে-নিচে অনেক কর্মকর্তারাও জড়িত আছে বলে তারা অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। এবিষয়ে এএসআই রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। দোহার থানা ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জরিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।