২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-
  • হোম
  • সকল সংবাদ
  • দোহারে শহীদ মিনারে বখাটেদের আড্ডা, চলে ধূমপান ও মাদকসেবন; দেখার কেউ নেই




দোহারে শহীদ মিনারে বখাটেদের আড্ডা, চলে ধূমপান ও মাদকসেবন; দেখার কেউ নেই

মোহাম্মদ ইমন মিয়া, বাঙ্গরা,কুমিল্লা করেসপন্ডেন্ট।

আপডেট টাইম : ফেব্রুয়ারি ১৮ ২০১৮, ১৬:২৪ | 717 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

ইমরান খান রাজ (দোহার প্রতিনিধি)

মহান ভাষার মাসে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় সারাদেশের শহীদ মিনারগুলো যখন সাজানো হচ্ছে, ঠিক তখন জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান ভাষা শহীদদের অবমাননা করে এলাকার কিছু অসচেতন, বখাটে ও মাদকসেবীরা। ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালির এক গৌরবের মাস, মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার মাস। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবীতে ঢাকার রাজপথ ছালাম, রফিক, জব্বার, বরকতের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। তাদের স্মরণে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। যে শহীদ মিনার ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালো রাত্রিতে হানাদার বাহিনীর কামানের গুলির আঘাতে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়, হানাদার বাহিনী শহীদ মিনারকে টার্গেট করেছিল এই কারণে যে, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালির আন্দোলন সংগ্রামের মুল চেতনাই ছিল এই শহীদ মিনার। তাই শহীদ মিনারকে অমর্যাদা করার অর্থই হলো ভাষা শহীদদের প্রতি অশ্রদ্ধা।

অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ঢাকার দোহার উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার ঘুরে দেখা যায় উল্টো চিত্র। জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে দাঁড়ানো, শহীদ মিনারের পিছনে বসে সিগারেট ও মাদকদ্রব্য সেবন করা, শহীদ মিনারে বসে আড্ডা দেওয়া এসব বিষয় প্রায়ই লক্ষ করা যায় দোহারের নারিশা উচ্চা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে। প্রতিদিন বিকাল হলেই শহীদ মিনারে জমে উঠেছে বখাটেদের আড্ডা। জুতা পায়ে সিগারেট হাতে একদল যুবককে দেখা যায় শহীদ মিনারের সিঁড়ির ওপর বসে আড্ডা দিচ্ছে। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছরই দেশী-বিদেশী অনেক নাগরিক খালি পায়ে শহীদ মিনারে যান। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু বখাটে ছেলেরা শহীদদের অসম্মান করে চলছে, যেটি একদমই কাম্য নয়।

নারিশা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব আজিম খান বলেন, একুশের পথ ধরেই মহান স্বাধীনতা। শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ এগুলোতে জড়িয়ে আছে আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্তের দাগ। শহীদ মিনারের অবমাননা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ব্যক্তির কৃত কর্মের দায় তাকেই নিতে হবে। শহীদ মিনার পরিচর্যা করার দায়িত্ব সকলের। সকলে মিলে আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্কুলের বাউন্ডারি বা সীমানা প্রাচীর না থাকায় রাতের বেলায় একদল মাদকসেবী স্কুলের সীমানার ভেতর প্রবেশ করে মাদকসেবন করে এবং স্কুল ভবরের লাইট, সুইচ বোর্ড ভেঙ্গে যায়। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর না হওয়াতেই এমনটা ঘটেছে। আমরা ইতোমধ্যে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি, সে আমাদেরকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেওয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

নারিশা এলাকার বাসিন্দা জনাব সাদিকুল ইসলাম মিলটন বলেন, যে ভাষা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে ইউনেস্কো কতৃর্ক স্বীকৃত হয়েছে, সেই ভাষার অমর্যাদা কখনও মেনে নেয়া যায় না। যেসব বখটেরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদির উপর দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয় এবং ধুমপান ও মাদকসেবন করে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। যাতে করে আর কেউ শহীদ মিনারে কোনরূপ অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে না পাড়ে। আমদের মায়ের ভাষার সম্মানকে যদি আমরা সাগরে ভাসিয়ে দেই তবে কি আমদের জাতীয় সংস্কৃতি ও জাতিসত্ত্বার সঠিক পরিচয় থাকে? ঠিক তেমনিভাবে শহীদ মিনারের পাদদেশে বা বেদীতে উঠে জুতা পায়ে দিয়ে ছবি তুলে তা আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেহায়ার মতো চিত্রায়িত করে আমাদের ভাষা শহীদদের প্রতি অশ্রদ্ধার দৃষ্টান্ত।

শহীদ মিনারে জুতা নিয়ে উঠে পড়ার দৃশ্য নিত্যকার। শিক্ষিত মানুষ থেকে শুরু করে অশিক্ষিত মানুষ তো বটেই কুকুরও উঠে পড়ে শহীদ মিনারে। সবার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটলেও বাধা দেন না কেউই। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। প্রতিবছর ২১শ ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে শহীদ মিনার ও তার আশপাশে থাকা দেয়ালে ভাষা আন্দোলনসহ বাঙালি জাতীয়তাবোধ নিয়ে নানা উক্তি লেখা হয়। দেয়ালে দেয়ালে আঁকা হয় শহীদ মিনার, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি। দেয়ালে লেখা ও আঁকা ছবিগুলো থেকে শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষ দেশ প্রেমের প্রেরণা পায়। অথচ শহীদ মিনারের ঠিক পেছনে থাকা দেয়ালে বিনা দ্বিধায় মূত্র ত্যাগ করে এক শ্রেণির বিবেকহীন মানুষ। শহীদ মিনারের ছবি আঁকা এ দেয়ালে অবলীলায় মূত্র ত্যাগ করতে দেখে লজ্জা পায় শহীদ মিনারে শুয়ে থাকা কুকুরও। অথচ আমাদের বিবেক তখনো ঘুমিয়ে থাকে।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET