“ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” গানের স্রষ্টা কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ৩৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার (২১ জুন) সকালে কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠাখালি এলাকায় রুদ্র স্মৃতি সংসদের আয়োজনে একটি শোক র্যালি কবির বাড়ি হয়ে মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ শেষে কবির কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয এবং তার সমাধিতে পুষ্প মাল্য অর্পণ করা হয়। সমাধিস্থলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে কবির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
রুদ্রের অনুজ সুমেল সারাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, মোংলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার সভাপতি নূর আলম শেখ, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশিত হয়।
মাত্র ৩৫ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং অর্ধ শতাধিক গান রচনা করেন। ভালো আছি ভালো থেকো গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুইবার ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন দ্রোহের এই কবি।
বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি তিনি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান কবিকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের প্রতি মগ্নতা।
১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশাল রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
Please follow and like us: