মোহাম্মদ রনি খাঁ, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ- সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বাইশ মাইল থেকে নলাম পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকার ভাঙাচোড়া সড়কটিতে চলছে ধুলার রাজত্ব। ফলে যান চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রতিদিনের নিত্যপ্রয়োজনে ব্যবহার করেন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ।
আজ বুধবার সরেজমিনে সড়কটির এমন চিত্র চোখে পড়ে । শিক্ষার্থী- পথচারী নাকে রুমাল চেপেও রেহাই পাচ্ছেন না। কুয়াশার মতো ধুলায় সবকিছু ধূসরিত হয়ে গেছে। হাঁচি-কাশিতে অস্থির এলাকাবাসী চরম ক্ষুব্ধ। এ পথের যাত্রীদের ভোগান্তিতে নাভিশ্বাস উঠেছে ।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস, মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজ, আলহাজ্ব জাফর ব্যাপারি উচ্চ বিদ্যালয়, গণ বিদ্যাপীঠসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থী ও বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানার কর্মকর্তা, কর্মচারী, রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের যাতায়াতের প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই সড়কটি।
চলাচলের রাস্তায় আবর্জনা পোড়ানো থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া, এবং রাস্তাটি পিচ ঢালা না হওয়ায় তৈরী হওয়া শুষ্ক ধূলামাটি পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ করে তুলেছে যে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়াও কষ্টকর হয়ে পড়েছে এই এলাকায়। সড়কটির আশপাশের ঘর-বাড়ি, দোকান আর গাছপালাও এখন লাল ধুলায় ছেয়ে গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ধূলার কারণে রাস্তায় হাটা যায় না, আবার মাস্কছাড়া বাসা থেকে বের হলে হাঁচির সমস্যা দেখা দেয়, তাই জরুরী ক্লাস বা কাজ না থাকলে বাসা থেকে বের হননা অনেকেই।
শুষ্ক মৌসুমে ধূলার পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যায় যা, বেশ উদ্ধেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গণবির ফিজিওলজি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মুনজিবা শামস বলেন, “শীতকালে বাতাসে ক্ষতিকর কণার পরিমাণ সহনীয় মাত্রার চাইতে বেড়ে যাওয়ায় অ্যাজমা,শ্বাসকষ্ট, এলার্জিসহ নানা রোগ হতে পারে । কার্বনডাইঅক্সাইড ও কার্বন মনো অক্সাইড বেড়ে যাওয়ার ফলে ফুসফুসে ক্যান্সার ও হতে পারে। এছাড়াও বাতাসে ভাসতে থাকা সিসা শিশুদের জন্য, বৃদ্ধ এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য ও ক্ষতিকর। এটি বুদ্ধিমত্তা বিকাশে বাধা দেয়।
এর আগে, প্রবল বর্ষণ, জলাবদ্ধতা আর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করলেও ভাঙা ইটের টুকরা ফেলা ছাড়া সড়কটি সংস্কারের যথাযথ কোন উদ্যোগ দৃশ্যমান না হওয়ায় রাস্তা পুনঃনির্মাণের দাবীতে একাধিকবার মানববন্ধন করেছে গণবির শিক্ষার্থীরা।
“ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে রাস্তার কাজ করা হচ্ছে, যদি অল্প সময়ের মধ্যে এই কাজ শেষ করা হয় তাহলে ধূলার সমস্যা কিছুটা হলেও সমাধান হবে এমনটাই আশা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে খুবই ধীর গতিতে রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সড়ক বিভাগ ইট-বালু দিয়ে কোনো রকমে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। তবে সড়কটির উন্নয়নে স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক বিভাগ।
Please follow and like us: