তাজুল ইসলাম,নাঙ্গলকোট(কুমিল্লা) প্রতিনিধি-কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ৫ম ধাপে ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চেযারম্যান ও সদস্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা বেশ তুঙ্গে রয়েছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা ততই জমে উঠছে। নির্বাচনী এলাকাগুলো পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। পোস্টারের পাশাপাশি প্রার্থীদের সাদা-কালো ব্যানারও চোখে পড়ে। প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন গ্রামের চায়ের স্টল থেকে শুরু করে ছোট-বড় বাজারগুলোর হোটেল-রেস্তোরা ও অফিসপাড়া। কাকডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন। ভোর হতেই প্রার্থী এবং কর্মীদের ডাকে ঘুম ভাঙ্গছে ভোটারদের। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন।
প্রার্থীরা নির্বাচনী পোস্টারে নিজেদের সৎ, যোগ্য প্রার্থী এবং সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদকমুক্ত ইউনিয়ন গড়া নিয়ে বিভিন্ন প্রচারণামূলক শ্লোগান লিখে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। এছাড়া মাইকে প্রার্থীদের গুণকীর্তন করে প্যারেডি গান বাজানো হচ্ছে। শুধুমাত্র পোস্টার এবং গণসংযোগে প্রাথীদের প্রচারণা থেমে নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকেও প্রার্থীরা ভোটারদের নিকট ভোট প্রার্থনা করছেন। এছাড়া প্রার্থীরা ভোটারদের সাথে নিয়মিত উঠান বৈঠকেও মিলিত হচ্ছেন। প্রার্থীরা ভোটারদেরকে বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে প্রার্থীরা নির্বাচনী কৌশল নিয়ে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের সাথে প্রতিনিয়ত আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন।
সরেজমিনে নির্বাচনী এলাকাগুলো ঘুরে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে খুব একটা উৎসাহ-উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যায়নি। নির্বাচনী এলাকা ঘুরে বিএনপি দলীয় প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সাথে নির্বাচন নিয়ে কথা বললে তারা জানান, ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ থাকলেও সুষ্ঠভাবে ভোট দেয়া নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সরকার দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে তাদের কর্মীদের নির্বাচনী মাঠে থেকে সরে যেতে হুমকি-ধমকি , নির্বাচনী প্রচারাভিযানে বাধা , এবং নির্বাচন থেকে সরে নাগেলে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর হুমকি প্রদানেরও অভিযোগ করেন তারা। এছাড়াও কিছু কিছু নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী এনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মহড়া দেওয়া হচ্ছে এবং অন্য প্রার্থীদের হুমকি-–ধামকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আগামী ২৮মে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। গত ১২মে প্রার্থীরা প্রত্যাহারের শেষ দিন বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী অহিদুর রহমান ছাড়া অন্য সব প্রার্থী প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় অহিদুর রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যার ফলে বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে বাঙ্গড্ডা, মৌকারা, মক্রবপুর, ঢালুয়া এবং সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রথমবারের মত দলীয় প্রতিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় পাঁচটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। ঢালুয়া এবং বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নে দুই জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন। এদিকে ছয়টি ইউনিয়নে সাধারণ সদস্য পদে ২শ ৩২জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ৫৫জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার (নৌকা), বিএনপির কামাল হোসেন মজুমদার (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির মজুমদার (আনারস), মৌকারা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের (নৌকা), বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান কলিম উল্লাহ (ধানেরশীষ), মক্রবপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী গোলাম মর্তুজা চৌধুরী মুকুল (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী মনিরুল ইসলাম (ধানের শীষ), ঢালুয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নাজমূল হাছান ভুঁইয়া বাছির (নৌকা), বিএনপির নাছির উদ্দিন ভুঁইয়া (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ জামাল হোসেন (আনারস), সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী কাজী মোঃ ইয়াছিন (নৌকা) এবং বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন দুলাল (ধানের শীষ) প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন হলে দুদলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে আশাবাদী সচেতনন ভোটারদের।