আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের শেষের দিকে শুরু হবে এমন আভাস মানুষের মুখেমুখে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সাভার থেকে প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড় ঝাপ। দলের জন্য কাজ করবে এমন নিবেদিত প্রাণকেই খোজঁছেন দলের হাইকমান্ড। নির্বাচনকে ঘিরে জনগনের মধ্যেও চলছে নানান জল্পনা আর কল্পনা। বাংলাদেশ আওয়ামী-লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের জাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও চোখ রাখছেন দলের উর্ধতন ব্যক্তিরা। ব্যাবহার করা হচ্ছে নানান কৌশল। যদিও বিএনপির এখন ক্লান্তিকাল। তারা মাঠে না থাকলে ও আড়ালে-আবডালে দলের জন্য প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিন স্তরের গোয়েন্দা সংস্থার পর্যবেক্ষণসহ তৃণমুল কর্মীদের চাওয়া পাওয়ার মুল্যায়ন কে প্রাধান্য দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করাটাই এখন প্রার্থীদের মুল লক্ষ্য।
ঢাকা -১৯ আসনের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ডাঃ এনামুর রহমান। এটি ঢাকা জেলায় অবস্থিত জাতীয় সংসদের ১৯আসন। এটি রাজধানি শহর ঢাকা হতে প্রায় ২৪ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম বড় শহর এবং ঢাকা মেগাসিটির অন্তর্ভুক্ত এলাকা। এ আসনটি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া, ধামসোনা, পাথালিয়া ইয়ারপুর, আশুলিয়া, বিরুলিয়া বনগাঁও ইউনিয়ন এবং সাভার ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসন ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন হিসাব নিকাশ। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একটু ভিন্নভাবে তাদের প্রচারণা চালাচ্ছেন। পরিবর্তনের হাওয়ায় রয়েছে তরুন প্রার্থীদের নাম। রাস্তার দুপাশসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ, বাজার, সরকারি প্রতিষ্ঠান এমনকি অলিগলিতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে। সঙ্গে আছে বিলবোর্ড ও ব্যানার। নিজেদের ছবি দিয়ে তারা ভোট প্রার্থনা করছেন নৌকার পক্ষে, আওয়ামী লীগের পক্ষে।
এ প্রসঙ্গে বর্তমান সাংসদ ডা. এনামুর রহমান বলেন, গত ২৫শে এপ্রিল আমাকে ঢাকায় ধানমন্ডির কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। উপর মহলের মেসেজ পাওয়ার পরই আমি নির্বাচনী এলাকায় দলকে সংগঠিত করতে যা যা করা দরকার করে চলেছি। নির্বাচনী এলাকায় একই দাবি করছেন সাবেক এমপি মুরাদ জং। অপর তরুন মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান পৌরমেয়রের ছেলে ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন জানান, দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দিলে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড় দলে একাধিক প্রার্থী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো কাজ করবো না।
সাভার ও আশুলিয়ায় খুব সরব এবং আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন আরেক তরুন ও শক্তিশালী আওয়ামী মনোনয়ন প্রার্থী, সাভার উপজেলার সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ঢাকা জলোর ছাত্রলীগরে সাবকে সভাপতি ফখরুল আলম সমর। দীর্ঘ দিন ধরে আওয়ামী মনোনয়ন পেতে লাগাতারভাবে খুবই সক্রিয় ভাবে মাঠে নৌকার পাল উড়িয়ে চলছেন সমর। তিনি ঢাকা-১৯ আসনে তরুন প্রজন্মের কাছে রাজনীতির আইকন হিসেবে পরিচিত। যেহেতু তরুনদের জোয়ারে নৌকা ভাসিয়ে উন্নয়নের শীর্ষ শিখরে পদার্পণ করতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিক থেকে আগামী সংসদ নির্বচনে আওয়ামী মনোনয়ন তিনিই পাচ্ছেন বলে ধারনা করছেন অনেক প্রবীণ আওয়ামী রাজনীতিবিদ। সমর বলেন, সুযোগ পেলে কাজের মাধ্যমে দেখিয়ে দেব যে একজন সাংসদ চাইলে তার এলাকা উন্নয়নের মাধ্যমে সোনার বাংলায় পরিণত করতে পারে।
অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়নে দুইবার নির্বাচিত সাবেক সাংসদ সালাউদ্দিন বাবুই মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্র হতে জানা যায়। তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, আমাদের দলীয় কোন পোষ্টার বা ব্যানার কোথাও লাগাতে পারি না। আওয়ামীলীগের লোকজন সব ছিড়ে ফেলে। যদিও বিষয়টি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অস্বীকার করেন।
এদিকে বড় দুই দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকায় জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের কোনো ধরনের সাংগঠনিক তৎপরতা নেই বলে জানান স্থানীয় নেতারা। তবে আগামী নির্বাচনে এরই মধ্যে দলের সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে জানান উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, গত নির্বাচনেও প্রার্থী ছিলাম। জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন হওয়ায় শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়িয়েছি।
যদি সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয় তাহলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মধ্যে এ আসনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারনা করছেন এ আসনের সাধারন জনগণ।।