নয়া আলো ডেস্ক- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করাতিপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হওয়া পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী ওরফে নন্দের বাড়ি ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা পরিদর্শন করেন। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার সময় ভারতীয় দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) রাজেশ উকাইয়া ও কনস্যুলার রমা কান্ত গুপ্ত আনন্দ গোপালের শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। এ সময় ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের জয়ন্ত সেন দীপু, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি, ঝিনাইদহ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুমার সমাদ্দার ও পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রেীয় নেতা বাবু কনক কান্তি দাশ উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে কাছে পেয়ে নিহত আনন্দ গোপালের স্ত্রী শেফালী গাঙ্গুলী, ছেলে অরুণ গাঙ্গুলী, সিন্ধু গাঙ্গুলী, মেয়ে রিনা গাঙ্গুলী, মিনা গাঙ্গুলী ও অর্চনা গাঙ্গুলীসহ পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) রাজেশ উকাইয়া ও কনস্যুলার রমা কান্ত গুপ্ত তাদের ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন। এ সময় ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন জানান, এ হত্যার সঠিক কোন কারণ আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি জানান এ ঘটনার সাথে আইএস এর কোন যোগসূত্র নেই। বাংলাদেশে আতঙ্ক ছড়াতেই আইএস এর নামে বিবৃতি দেয়া হচ্ছে। তিনি পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বলেন, দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা জয়ন্ত সেন দীপু বলেন, পুরোহিত হত্যার বিচার না পেলে আমরা কেন্দ্রীয় ভাবে বৃহৎ আন্দোলনের ডাক দেব। এদিকে পুরোহিত আনন্দ গোপাল হত্যার ২৭ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানায় নিহতর ছেলে অরুণ গাঙ্গুলী বাদী হয়ে একটি মামলা (মামলা নং-১০) করেছেন। পুলিশ মামলা ও তদন্ত সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানাতে পারছে না। জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করে হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে কৌশল ঠিক করছেন বলে জানা গেছে। ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা নিহতের বাড়িতে থেকে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের অফিসে যান এবং সেখানে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ সদরের সোনাইখালী গ্রামের মহিষের ভাগাড় নামক স্থানে পুরোহিত আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী নন্দ (৭০) কে জবাই করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নলডাঙ্গা সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত আনন্দ গোপাল একই উপজেলার করাতিপাড়া গ্রামের মৃত সত্য গোপাল গাঙ্গুলীর ছেলে। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কিছুক্ষণ পরেই হিন্দু পুরোহিত হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন আইএস বিবৃতি দেয়। মঙ্গলকার ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসা খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনার সাথে নিঃসন্দেহে জঙ্গি সংগঠন জড়িত।