
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি ■
নড়াইলে আখ চাষ করে ভাগ্য বদলে গেছে কামাল মোল্যা নামে এক ভু’মিহীন কৃষকের। কামাল মোল্যা এখন গেন্ডারি আখ চাষের মডেল কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। শুধু কামাল মোল্যা নয়। উপজেলার রাজুপুর, খলিশাখালী ও মল্লিকপুর গ্রামের অন্তত এক ডজন কৃষক আখ চাষ করে লাখপতি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জ ানা গেছে,নড়াইল জেলার নড়াইলে খলিশাখালী গ্রামের পশ্চিম পাড়ার ইউসুফ মোল্যার ছেলে কামাল মোল্যা একজন ভু’মিহীন কৃষক ছিল। পিতার আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় লেখাপড়া করতে না পারলেও দৈন্যতার কাছে হার মানেনি সে। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের পাঠানো তথ্যর ভিতিতে জানা যায়‘ মাঠে নিজস্ব চাষের জমি না থাকায় অপরের মাত্র ১৫ শতক জমি ৯শত টাকা বাকিতে লিজ নিয়ে প্রথম বছর তিনি গেন্ডারি আখ চাষ শুরু করে। তিনি বেশ লাভবান হন। এতে তার উৎসাহ বেড়ে যায়। পরবর্তী বছর বেশী জমি লিজ নিয়ে আখ চাষ করতে থাকে । এভাবে প্রতি বছর গেন্ডারি আখ চাষ করে আখ বিক্রির টাকা দিয়ে মা,স্ত্রী,এক ছেলে ও ছোট ভাইসহ পরিবারের ৫ সদস্যের সংসার চালিয়ে বাড়িতে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা দালান নির্মান করে এবং আরও ৪ কক্ষ একটি দালানের কাজ শুরু এবং জমি ক্রয় করে। প্রতি বছর ১৫/২০ শতক করে জমি ক্রয় করে বর্তমান তার ক্রয়কৃত জমির পরিমান ১ একর ১৫ শতক। এ বছর সে নিজস্ব ১ একর জমিতে আখ চাষ করে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করে। গেন্ডারি আখ চাষ করে ভাগ্য বদলে গিয়েছে কামাল মোল্যার। তিনি জানান,১ একর জমিতে গেন্ডারি আখ চাষে তার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ তার নীট লাভ দাড়িয়েছে ৪ লক্ষ টাকা। এতে তিনি অত্যন্ত খুশী এবং এ বছরও কিছু জমি ক্রয় করবেন বলে আশা করছেন । তিনি ছোট ভাই কামরুল মোল্যাকে চাকুরীর পিছনে ছুটে সময় নষ্ট করতে না দিয়ে আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করেছেন বলে আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়কে জানান। কামাল মোল্যাকে আখ চাষে লাভবান হতে দেখে এ বছর একই গ্রামের আবজাল শেখ প্রায় ৪ লক্ষ, আলী নেওয়াজ শেখ ৩লক্ষ ৫০ হাজার, মোশারেফ শেখ ২ লক্ষ, মোস্তাইন গাজি ২ লক্ষ,লাবলু কাজি ১ লক্ষ ৫০ হাজার,বাবলু কাজি ১ লক্ষ, রমিন কাজি ২ লক্ষএবং পার্শ্ববতী রাজুপুর গ্রামের লোকমান শেখ ২ লক্ষ, মাসুদ সরদার ১ লক্ষ ৫০ হাজার,তৌহিদ সরদার ১ লক্ষ,মফিজ শেখ (মাতুব্বর) ১ লক্ষ ৫০ হাজার আখ বিক্রি করেছেন। আগামি মৌসুমে উক্ত কৃষকরাসহ আরো অনেকে গেন্ডারি আখ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। আখ ব্যবসায়ী তুরফান মিয়া (বাঘারপাড়ার) ও তারিকুজ্জামান দুলু (নড়াইল) বলেন, এ বছর তারা রাজুপুর,খলিশাখালী মল্লিকপুরসহ অত্র অঞ্চলের প্রায় ২ কোটি টাকার আখ ক্রয় করে খুলনা, সাতক্ষীরা,ঝিনেদা,মাগুরা,মাদারীপুর,শরীয়তপুসহ বিভিন্ন্ জেলায় পাঠিয়েছেন্। এ অঞ্চলের গেন্ডারি আখের রং এবং গুনগতমান ভাল হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় এ আখের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । সব কিছু মিলিয়ে খলিশাখালী গ্রামের কামাল মোল্যা এখন এলাকায় সফল ও মডেল আখ চাষী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।