৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

শিরোনামঃ-




নড়াইলে ইটভাটার কবলে খেজুর বাগান

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৩ ২০১৮, ২০:০৮ | 793 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ- নড়াইলে ইটভাটার কারণে খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় রসের অভাব দেখা দিয়েছে বর্তমানে সেই ঐতিহ্য ও উৎসব হারাতে বসেছে। এখন আর বাড়ি বাড়ি সেই দৃশ্য দেখা যায় না এক সময় কনকনে শীতে জবুথবু অবস্থার মধ্য দিয়েও গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে চলতো ভিজা পিঠার উৎসব। উনুনের চারপাশে বা ঘরের বারান্দায় মাদুরে বসে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে চলতো ভিজা পিঠা খাওয়ার উৎসব। বর্তমানে সেই ঐতিহ্য ও উৎসব হারাতে বসেছে। এখন আর বাড়ি বাড়ি সেই দৃশ্য দেখা যায় না। ইটভাটার কারণে খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় রসের অভাব দেখা দিয়েছে। বাজারে বর্তমানে সামান্য রস পাওয়া গেলেও দাম বেশি। তাও চাহিদা মতো মেলে না। প্রতি ঠিলা,কলস (৩,৪ লিটার) রস বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে দুইশ টাকায়। খুচরা প্রতি গ্লাস বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলায় বর্তমানে প্রায় একশত ইটভাটা রয়েছে। ইট পোড়াতে খেজুর গাছের চাহিদা বেশি থাকায় গত ১৫/২০ বছর ধরে জেলার অধিকাংশ এলাকার খেজুর গাছ ইট ভাটায় পুড়ে ছাই হয়েছে। গ্রামা ঞ্চলে অল্প সংখ্যক খেজুর গাছ থাকলেও গাছির অভাবে রস সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় গাছিরাও পেশা বদল করেছে। নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হিমেল মোল্যা। বলেন, কয়েক বছর আগেও বাড়িতে ৩,৪ হাড়ি খেজুর রসের পিঠা তৈরি করা হতো। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ে এক সঙ্গে খাওয়ার মজাটাই ছিল আলাদা। কিন্তু এখন রসের অভাবে আর পিঠা তৈরি হয় না। নড়াইল শহর সংলগ্ন পৌর কমিশনার মাহবুব আলম,  বলেন, এক সময়ে আমাদের বাড়িতে ৩০ কলস খেজুর রস হতো। এখন মাত্র কয়েক কলস রস হয়। তাও গাছির কোমরে ব্যথা পাওয়ার কারণে সেটাও হচ্ছে না। রস কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন গাছির অভাব হয়ে গেছে। সাধারণত গাছির ছেলেরা পড়াশোনা করে অন্য পেশায় চলে যাবার কারণে রস সংগ্রহ কম হচ্ছে। নড়াইল থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের বাংলার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ, জানান, তাদের জমিতে শতাধিক খেজুর গাছ ছিল। গাছিরা প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে রস আহরণ করতো। দুই ভাগে ভাগ করে গাছির অংশ নেয়ার পরও ২০,৩০ ঠিলা,কলস রস ভাগে পাওয়া যেতো। কিন্তু গাছির অভাব হওয়ার কারণে খেজুর গাছ বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। জেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের আক্তার হোসেন মোল্যা,বলেন, আমাদের এলাকায় অল্প কিছু খেজুর গাছ থাকলেও পিঠা খাওয়ার জন্য রস পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। খেজুরের রসের চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় গাছির কাছে রসের জন্য সিরিয়াল দিতে হয়। সদর উপজেলার ফেদী গ্রামের মোঃ আজাদ হোসাইন, সোহাগ রহমান জানান, বাজারে খেজুরের গুড় কিনতে গিয়ে রসের সাথে চিনি দিয়ে মেশানো গুড় কিনে এনেছেন। ওই গুড় দিয়ে পিঠা বা ভিজানো পিঠা তৈরি করা হলেও আগের সেই স্বাদ নেই। উপ পরিদর্শক,আমিনুজ্জামান তিনি আফসোস করে বলেন, ‘সেই স্বাদ যে কোথায় হারিয়ে গেল।’এক সময় দেড় থেকে দুইশ খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করতেন। কিন্তু ইটভাটার কারণে খেজুর গাছের মালিকরা বিক্রি করে দেয়ায় এখন আর কোনো গাছ নেই। ৫,১০টি থাকলেও তা কেটে শ্রমের মূল্য আসে না। সে কারণে এখন খেজুর গাছ কাটা (রস আহরণ) ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এক সময়ে খেজুরের রস বিক্রি করে সংসার চললেও এখন কৃষি কাজ করে সংসার চালাতে হচ্ছে। নড়াইল শহর সংলগ্ন খেজুর গাছের গাছি মো. সাজ্জাদ, মোল্যা জানান, তিনি ২৫ বছর ধরে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করেন। বর্তমানে গাছ কমে যাওয়ায় অল্প কিছু গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে নড়াইল বাজারে বিক্রি করেন। প্রতি ঠিলা (আনুমানিক ৪/৫ লিটার) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা করে। খুচরা হিসেবে প্রতি গ্লাস রস বিক্রি করছেন ৮,১০ টাকায়। নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায় জানান, আজ ইটভাটার কারণে খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় রসের অভাব দেখা দিয়েছে। বাজারে বর্তমানে সামান্য রস পাওয়া গেলেও দাম বেশি। তাও চাহিদা মতো মেলে না।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET