মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মানবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রোগ প্রতিরোধের জন্য জিংক একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জিংকের তীব্র অভাব পরিলক্ষিত হয়। বর্তমানে দেশে ৪৫% শিশু এবং ৫৭% অপ্রসতি ও কুমারী জিংকের ঘাটতিতে ভূগছেন। বাঙ্গালির ভাত হল প্রধান খাদ্য যা মোট ক্যালরীর চাহিদার প্রায় ৭০% পূরণ করে।কিন্তু ভাত থেকে প্রাপ্ত পুষ্ঠি উপাদানের মধ্যে জিংক এর যথেষ্ঠ ঘাটতি রয়েছে। খাদ্য হিসাবে গ্রহণকৃত ভাতে জিংক এর ঘাটতির বিষয়টি উপলদ্ধি করে বাংলাদেশে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর গবেষকগণ নিরালস ভাবে গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছে। বাঙ্গালির প্রধান খাদ্য ভাতের মধ্যে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৭২ এবং ব্রি ধান৭৪ জাত গুলি উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক জাত গুলি বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ এর জন্য ২০১৩-২০১৫ সালে অনুমোদন দিয়েছে। অন্যদিকে দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানামুখী পরিকল্পণা নিয়ে এগিয়ে চলছে সরকার।
ব্রি ধান৭৪ গত ২০১৪ সালে সরকার বোরো মৌসুমে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন করেছেন। জাতটি অধিক ফলনশীল এবং ভাল ব্যবস্থাপনায় হেক্টর প্রতি ৮ টনের অধিক ফলন পাওয়া যায়। পূর্ণ বয়স্ক গাছের উচ্চতা ৯২ সেঃমিঃ হয়। গাছ মজবুত বিধায় ঢলে পড়ে না। চালের আকার আকৃতি মাজারি মোটা ও রং সাদা। চালে জিংক এর পরিমান ২৪.২ মিলিগ্রাম/কেজি। এর প্রোটিনের পরিমান ৮.৩%। বি ধ্রান৭৪ এর জীবনকাল ব্রি ধান২৮ এর কাছাকাছি।
আমাদের খাদ্য উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী যেহেতু কৃষক সেহেতু জিংক সমৃদ্ধ ধানের ভাল ফলন পেতে ব্রি ধান৭৪ এর উন্নত চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের আগাম জ্ঞান থাকা একান্ত প্রয়োজন।
এ লক্ষ্যে আজ ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ রোজ রবিবার নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামে ২৫ জন কৃষক/কৃষাণীদের ব্রি ধান৭৪ এর উপর জাতের বৈশিষ্ট্য ও চাষের গুরুত্ব, উন্নত চাষাবাদ কলাকৌশল, ধান বীজ উৎপাদন প্রযুক্তি, রোগ ও অনিষ্টকারী পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা এবং মানুষের জিংক পুষ্টি প্রয়োজনীয়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ডিএই লোহাগড়া নড়াইল, কৃষিবিদ মোঃ মজিবর রহমান এআরডিও হারভেষ্টপ্লাস বাংলাদেশ যশোর অঞ্চল, মোঃ আনোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার, লোহাগড়া নড়াইল।
এগ্রিকালচারাল এডভাইজরী সোসাইটি (আস) ও হারভেষ্টপ্লাস বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ কোর্সটি সফল বাস্তবায়নে আস এর এরিয়া কোর্ডিনেটর মোঃ সাইফুল ইসলাম ও সুব্রত কুমার ঘোষ নিরলস ভাবে কাজ করেন।