পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সরকার পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। শুক্রবার সকালে গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করছে। এ কারণে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে।’
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াকে বেদনাদায়ক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া অনেক অনেক বেশি বেদনাদায়ক। তারা শুধু যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির নিন্দা করছে তা নয়। অতি সম্প্রতি কমনওয়েলথের একটি বৈঠকে তারা খালেদা জিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশ নিয়ে পাকিস্তানের বক্তব্য দেয়ার বিষয়টি বেশি মাথাব্যথার কারণ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো আমরা অবশ্যই মাথায় রাখব।’
এ সময়, রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার বিষয়ে তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানানো পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলেও জানান তিনি। তার মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে তুরস্ককে মিলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ ছাড়ার আগে লিখিতভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানিয়ে গেছেন যে, তিনি বাংলাদেশের বাইরে যাচ্ছেন এবং তার অবর্তমানে কে দায়িত্ব পালন করবেন, সেই কূটনীতিকের নামটাও বলে গেছেন। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রত্যাহার হলে বা প্রত্যাহার করে নিলে সাধারণত বলে করা হয় । এক্ষেত্রে সেটি তারা করেনি।
আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে বহিঃবিশ্বের সম্পর্ক শক্তিশালী দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যেসব চক্রান্ত চলছে, তার চেয়ে অভ্যন্তরীণ চক্রান্তের প্রভাব অনেক বেশি শক্তিশালী।’
এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ। আমরা আমাদের মতো করে দেশ পরিচালনা করব। বিশ্বের কোনো দেশ আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’
সকালে ভোলায় এক সংক্ষিপ্ত সফরে গিয়ে সেখানকার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী নিজামীদের গাড়িতে পতাকা দিয়ে দেশকে কলঙ্কিত করেছেন খালেদা জিয়া। আর শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।’
তিনি মনে করেন, ‘যেসব রাষ্ট্র এই বিচারের বিরোধিতা করছে, সেসব রাষ্ট্রে বর্তমানে ইসলামী দলগুলো ক্ষমতায় থাকায় তারা বিরোধিতা করছে। এর ফলে কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।’