২০শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

শিরোনামঃ-




“পাশাপাশি চিরনিদ্রায় শায়িত বাবা-মেয়ে”

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

আপডেট টাইম : মার্চ ২০ ২০১৮, ২০:৫৭ | 846 বার পঠিত | প্রিন্ট / ইপেপার প্রিন্ট / ইপেপার

সাইফুল আলম সুমন, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ- বিমান দুর্ঘটনায় নিহত গাজীপুরের শ্রীপুরের আলোকচিত্রী এফ এইচ প্রিয়ক ও তার কন্যা তামারা প্রিয়ন্ময়ীর ৪র্থ দফা জানাজা শেষে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শ্রীপুরে আব্দুল আউয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজ মাঠে তৃতীয় জানাজা এবং সকাল ১১টায় নিজ বাড়ীর ঈদগাহ মাঠে ৪র্থ জানাজা শেষে বাড়ির আঙিনায় নিহত ফারুক হোসেন প্রিয়কের নিজ হাতে লাগানো প্রিয় ফুলবাগানে দুপুর ১২টার দিকে বাবা-মেয়েকে পাশাপাশি সমাহিত করা হয়। গত সোমবার (১৯)মার্চ সকালে নেপালে ২৩জনের প্রথম জানাজা ও ঢাকা আর্মি স্টেডিয়ামে বিকেলে দ্বিতীয় জানাজা শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে দুতাবাস কতৃপক্ষ।
এর আগে সোমবার(১৯মার্চ) সকালে প্রিয়ক-প্রিয়ন্ময়ীর মৃত্যুর সংবাদটি মা ও স্ত্রীকে জানানো হয়, এরপর থেকে তাঁরা আর স্বাভাবিক নেই। বেশি কথা বলতে পারছেন না। যেন অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছেন। হাসপাতালে থাকতেই এ্যানিকে জানানো হয়, তাঁর সঙ্গে থাকা দুই প্রিয়জন আর নেই। মৃত্যুর খবর প্রথম শুনে অ্যানি বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না। পরে বেশ কয়েকবার নানাভাবে বুঝিয়ে তাদের নিশ্চিত মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। এরপর থেকে কেবলই মুর্ছা যাচ্ছে এ্যানি। জ্ঞান ফিরে আসার পর আবার বলছে মৃত্যুর খবর সঠিক নয়। স্বামী ফারুক ও তার শিশুকন্যা ফিরে আসবে। এ দুঃসংবাদ পাওয়ার পর থেকে বাড়ি ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেন এ্যানি। সোমবার সকালে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। এ্যানি কান্নাকাটি করে বারবার বলছিলেন, ‘সোমবার আমরা নেপালে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। আজ সেই সোমবারই আমার স্বামী-সন্তান ফিরেছে, তবে লাশ হয়ে।’ ও আল্লাহ আমাকে কেন বাাঁচিয়ে রাখলে আমাকে কেন নিয়ে গেলেনা আমার স্বামী আর সন্তানের কাছে, স্বামী সন্তান ছাঁড়া কিভাবে বাঁচবো আমি। ‘আমাকেও নিয়ে যাও আল্লাহ’ ।
সোমবার (১৯মার্চ ) রাত আটটার দিকে আভা পরিবহনের একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাবা-মেয়ের মরদেহ জৈনা বাজার সংলগ্ন নগরহাওলা গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।
মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি বাড়িতে পৌঁছার পর এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। শত শত মানুষ বাড়িটিতে ভিড় জমায়। সবাই যেন শোকে স্তব্ধ। মা ফিরোজা বেগম একমাত্র সন্তান প্রিয়ক ও নাতনিকে হারিয়ে শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর শোনার পর থেকে ছেলে ও নাতনিতে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন ফিরোজা বেগম। বংশের প্রদীপ জ্বালানোর মতো কেউ বেঁচে না থানায় আহাজারি করছেন স্বজনরাও। আর প্রিয়কের নানা স্মৃতি নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন তার বন্ধুরাও।
সন্তানের শেষ দেখার আকুতি ছিল মায়েদের: প্রিয়কের মা ফিরোজা বেগম ও প্রিয়ন্ময়ীর মা আলমুন নাহার এ্যানির শেষ আকুতি ছিল সন্তানের শেষ যাত্রার অববয় দেখার। কিন্তু লাশটি আগুনে পোড়া থাকায় তা দেখার সুযোগ পেলেন না।
গত ১২ মার্চ সোমবার নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তÍ হয়। এতে শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের ফারুক হোসেন প্রিয়ক ও তাঁর ফুফাতো ভাই মেহেদী হাসানের পরিবারের পাঁচ সদস্য ছিলেন। দুর্ঘটনায় প্রিয়ক ও তার আড়াই বছর বয়সী মেয়ে তামররা প্রিয়ন্মীয় নিহত হন, আহত হন প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার এ্যানি, তার ফুফাতো ভাই মেহেদী হাসান ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বর্ণা। আহতদেরকে গত শুক্রবার দেশে এনে ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বড় ধরনের কোন ক্ষত না থাকলেও তার মানসিকভাবে অসুস্থ।

Please follow and like us:

সর্বশেষ খবর

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি- আলহাজ্ব আবদুল গফুর ভূঁইয়া,সাবেক সংসদ সদস্য, প্রধান সম্পাদক- খোরশেদ আলম চৌধুরী, সম্পাদক- আশরাফুল ইসলাম জয়,  উপদেষ্টা সম্পাদক- নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

ঢাকা অফিস : রোড # ১৩, নিকুঞ্জ - ২, খিলক্ষেত, ঢাকা-১২২৯,

সম্পাদক - ০১৫২১৩৬৯৭২৭,০১৬০১৯২০৭১৩

Email-dailynayaalo@gmail.com নিউজ রুম।

Email-Cvnayaalo@gmail.com সিভি জমা।

প্রধান সম্পাদক কর্তৃক  প্রচারিত ও প্রকাশিত।

 

সাইট উন্নয়নেঃ ICTSYLHET