
ইয়ার হোসেন, ঝিকরগাছা (যশোর) থেকেঃ প্রায় ৪’শ বছরের ঐতিহ্য বহন করে আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীর কালি মন্দির। প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষ সপ্তাহের শেষ দিন এই এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রচীন কাল থেকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী বাজারের পাশে স্থাপিত এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে নানা রকম জল্পনা কল্পনা যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রবীন ব্যক্তিরা এই মন্দিরের স্থাপতিকাল খ্রীষ্টীয় শতাব্দির ১৬৬২ সালে বলে দাবী করেন। বিগত ২০/২৫ বছর ধরে এই মন্দিরটিকে ঘিরে পালিত হয়ে আসছে পৌষকালী মেলা। মেলাটিতে দেশের এবং পাশ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তদের মিলন মেলায় পরিনত হয় এবং মেলার মাঠে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রির জন্য নামি-দামি সামগ্রী নিয়ে আসে। পৌষকালী মেলা শুরু হওয়ার পূর্বে কয়েক’শ বছর ধরে এখানে ঘট পুজা পালিত হতো বলে প্রবীন হিন্দু ব্যক্তিরা জানিয়েছে। প্রবীন ব্যক্তিরা এর ইতিহাস সন্মন্ধে জানান ইংরেজ শাসনামলে পূর্তগীজ দস্যূরা ওই গ্রামে আশ্রয় নেয়। অতঃপর দস্যূদের সর্দার রডারিক রডা জোর করে বৃদ্ধ কমলেসের ষোড়শী কন্যা মাদলসাকে বিয়ে করে । রডারিক রডা অন্য ধর্মের মেয়েকে জোর পূর্বক বিয়ে করে তাকে না পেয়ে সন্যাসী জীবন বেছে নেয়, এবং ওই গ্রামে থেকে যায়। দুই ধর্মের দুই জনের প্রেম প্রনয়ের জন্য রডারিক উপসনার জন্য গদখালী গ্রামের হরহরী নদের পাশে গড়ে তোলে গড বা কালী মন্দিরটি। যুদ্ধে রডারিক রডার মৃতের পর মাদ্রাসা তার বাকি জীবন ওই মন্দিরে কাটিয়ে দেয়। পরবর্তীতে সেটা গদখালী কালী মন্দির নামে পরিচিতি পায় এবং ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার ক্ষমতায় আসলে মন্দিরটি মেরামত করা হয়। যা ঝিকরগাছা উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বলে এলাকাবাসীর অভিমত।