
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভিজিডির কার্ডধারী বেশকিছু ভাতাভোগীর কার্ডের বিপরীতে তাদের প্রতি মাসের বরাদ্দকৃত চাল বিভিন্ন ভুয়া নামে তুলে নেয়াসহ মে ও জুন মাসের ভিজিডির চালের ডিও উত্তোলনের পরেও উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ভিজিডি কার্ড নিয়ে প্রতারণার শিকার ভূক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিকার পাননি । তবে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দাবী একাধিকবার এবিষয়ে ৭নং শিবনগর ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হলেও তিনি বিষয়টি নিয়ে কোন গুরুত্ব দেননি।
ভিজিডির উপকারভোগী মহিলা তালিকায় ৯নং ওয়ার্ডের চককবির পালপাড়া গ্রামের গজেন চন্দ্রের স্ত্রী সুবাসীনি রানীর নাম থাকলেও একবারেও চাল পাননি তিনি। একইভাবে একই ওয়ার্ডের ভাতাভোগী বিউটি রানীর অভিযোগ এর আগে ৪মাসের চাল একসঙ্গে দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত মে ও জুন মাসের চাল পাননি তারা। একই অভিযোগ করেন মিনু রানীসহ ওই ইউনিয়নের একাধিক ভিজিডি চক্রের তালিকাভূক্ত উপকারভোগী। অভিযোগ উঠেছে শুধু এই ওয়ার্ডেই নয়,বরং ভিজিডি কার্ড নিয়ে তদন্ত করা হলে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডেই এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠবে। সেই সঙ্গে চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততাও বেরিয়ে আসবে বলে জানান ভিজিডি চক্রের একাধিক উপকারভোগী।
জানা যায়,করোনাকালীন এই মহামারীতে কর্মহীন হয়ে পড়া শিবনগর ইউনিয়নের ভিজিডির উপকারভোগী ৪৪০জনের বিপরিতে মে ও জুন মাসের ২৬.৪০০মে.টন চাল দীর্ঘদিন আগে উত্তোলন করা হলেও ওই চাল উপকারভোগিদের মাঝে আদ্যাবধি বিতরণ করা হয়নি। অপরদিকে উপজেলার অন্য ইউনিয়নগুলোতে মে মাসের ভিজিডির চাল ২৫ মে এবং জুন মাসের ভিজিডির চাল ১৪জুন বিতরণ করা হলেও শুধুমাত্র শিবনগর ইউনিয়নে চাল বিতরণ না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নি¤œ আয়ের ভিজিডি চক্রের ৪৪০জন উপকারভোগী। করোনাকালীন কর্মহীন ভিজিডি চক্রের উপকারভোগীরা সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের কাছে ধরণা দিয়েই কোন কুল কিনারাই পাচ্ছেননা। এদিকে প্রতিমাসের চাল বিতরণের একটি নির্দিষ্ট সরকারী নিয়ম থাকলেও কোন কিছুরই তোয়াক্কা করেননি সংশ্লিষ্ট ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
এসব বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রীতা মন্ডল জানান,শিবনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাদের কোন সরকারী নির্দেশনা মানেননা। ভিজিডির সরকারী চাল উত্তোলনের পর তিনি কোনভাবেই সেগুলো বিতরণ না করে দীর্ঘসময় রাখতে পারেননা। তিনি আরও বলেন, ভিজিডির উত্তোলনকৃত চাল বিতরণের জন্য তাঁকে একাধিকবার বলা হলেও তিনি কোন নিয়মই মানেননা।
শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন,ইউনিয়ন সচিবের সাথে ঝামেলা ও তার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ভিজিডির দুমাসের চাল বিতরণে দেরী হয়েছে। উপকারভোগী ভিজিডি চক্রের উপকারভোগীদের লিখিত অভিযোগ এর বিষয়ে তিনি বলেন,তাদের বাদ দিয়ে খুব শ্রীঘ্রই ভিজিডির চার বিতরণ করা হবে।
এবিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন,ভিজিডি চক্রের তালিকাভূক্ত উপকারভোগীদের বাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর ইচ্ছেমতো চাল বিতরণ করতে চান,এটি বন্ধ করা হলেই তিনি চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন। তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।