এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা থেকেঃ- পহেলা বৈশাখ বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। প্রাণের উৎসব তো বটেই। ক’দিন পরেই কোটি বাঙালির কন্ঠে উচ্চারিত হবে সেই অবিনাশী সুর ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। বৈশাখ বন্দনায় মেতে উঠবে বাঙালি জাতি। জরা-জীর্ণতা মুছে তাপস নি:শ্বাস বায়ে মুমূর্ষরে উড়িয়ে প্রাণের উৎসবে মিলিত হবে বাঙালি। অগ্নি স্নানে সূচি হোক ধরা-এ কামনায় সবাই এক সুরে গাইবেন ‘একদিন বাঙালি ছিলাম রে’। পুরাতন হিসেবের খাতার লেনদেন মেটাতে বসবে শুভ হালখাতা। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির শ্বাশত প্রাণের উৎসবে মেতে জানাবেন শুভেচ্ছা। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য তুলে ধরে পালিত হবে নানা অনুষ্ঠান। এজন্য চাই বাঙালি সাজে নিজকে সাজানো। নতুন বর্ষকে বরণ করে নিতে এখন সর্বত্রই চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। উৎসবকে ঘিরে ঘরে-বাইরে, শহরে-গ্রামে ব্যাপ্তি ছাড়িয়েছে নানামুখী অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। বিক্রেতারা বলছেন, বৈশাখে বেচাকেনার পরিমাণ ঈদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। বৈশাখ বরণ উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। নারী পুরুষ শিশু সব ধরণের ক্রেতার ভীড় লক্ষ্য করা গেছে দোকানগুলোতে।
সাতক্ষীরা শহরের দোকানগুলোতে পড়ে গেছে কেনাকাটার ধুম। দোকানগুলো সাজানো হয়েছে বাহারী পোশাকে। নিজস্ব ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলিয়ে ফ্যাশন হাউসগুলো তৈরি করছে বাহারি পোশাক। নানা রকমের সুতি শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টি-শার্টসহ বিভিন্ন ধরণের পোশাকে ভরে উঠছে পোশাকের দোকানগুলো। নারী পুরুষ ভেদে পোশাকের কদর বেড়েছে সর্বত্র।
সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরে এসব পোশাক এখন শোভা পাচ্ছে ফ্যাশন হাউসে। বৈশাখ এলেই এখানে সব শ্রেণির মেয়েদের আনাগোনা বেড়ে যায়। একটাই কারণ গরমে সুতি কাপড় কেনা। এই উৎসব ঘিরে প্রতিটি দোকান বেশ জমজমাট। বিক্রিও বেড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র এই বৈশাখে তাদের কেনাকাটার পরিমাণ ঈদের চেয়ে কোন অংশ কম নয়। কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয় এ উৎসবে। শহরের বিক্রয়কর্মীরা জানালেন, বৈশাখ ঘিরে বাহারি সব শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও টি-শার্ট আনা হয়েছে। এগুলোর বিক্রিও ভাল হচ্ছে। বৈশাখ উৎসব ঘিরে তাদের পোশাকে ডিজাইন ও রঙে বৈচিত্র আনা হয়েছে। ধীরে ধীরে ক্রেতা বাড়ছে। বৈশাখের আগে তাদের সব পোশাক বিক্রি হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলা ও বিভিন্ন বাজারের দোকানগুলোতে পড়ে গেছে কেনাকাটার ধুম। বাহারী নতুন পোশাকে ভরে গেছে দোকানগুলো। গ্রামের মানুষের মধ্যে বৈশাখ বরণে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বর্ষবরণের উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে। বাঙালি পোশাকের সমারোহে নান্দনিক রূপে সাজা শুরু হয়েছে শহর থেকে গ্রাম। পহেলা বৈশাখের সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় জেলার মানুষ।